অনশনকারী ঢাবির সেই আখতার হাসপাতালে
প্রশ্নফাঁস হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে অনশনরত আইন বিভাগের ছাত্র আখতার হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী তার সঙ্গে কথা বলতে আসলে তার সামনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন আখতার। এরপর অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। এ সময় প্রক্টরের সঙ্গে ছিলেন আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক রহমত উল্লাহ ও ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।
এর আগে তার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন আইন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী ও কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সকাল সাড়ে ১০টায় অনশনরত শিক্ষার্থীকে দেখতে আসেন আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। এ সময় তিনি বলেন, প্রশ্নফাঁস হওয়ার প্রতিবাদে একটা ছেলে বসে আছে, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কতটা অসংবেদনশীল হয়ে গেছি যে তাকে দেখতে পর্যন্ত কেউ আসেনি, এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে?
আখতার হোসেন চারটি দাবিতে এ অনশন করছেন। দাবিগুলো হলো- 'ঘ' ইউনিটের পরীক্ষা বাতিল, পুনরায় পরীক্ষা নেয়া, জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও বিগত বছরে যারা জালিয়াতি করে ভর্তি হয়েছে তাদের চিহ্নিত করে বহিষ্কার করা।
গত ১২ অক্টোবর ঢাবির প্রথম বর্ষ স্নাতক শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষায় 'ঘ' ইউনিটে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ৬ জনকে আটক করা হয়। শাহবাগ থানায় তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়।
প্রশ্নফাঁসের পর নতুন করে পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানায় বাম ছাত্র সংগঠনসহ কয়েকটি সংগঠন। প্রশ্নফাঁসের বিতর্কের মধ্যেই গত মঙ্গলবার ফলাফল প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যেখানে পাসের রেকর্ড হয়। নিকটতম অতীতে কোনো ইউনিটে এত ভালো ফলাফল হয়নি।
প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, ‘ঘ’ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৮ হাজার ৪৬৩ জন। এ বছর ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ৯৫ হাজার ৩৪১ জন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৭০ হাজার ৪৪০ শিক্ষার্থী। যা শতকরা হারে ২৬ দশমিক ২১ শতাংশ। এর আগে ২০১৩-১৪ সেশনে ‘ঘ’ ইউনিটে পাসের হার ছিল ১১ দশমিক ৪ ভাগ, ২০১৪-১৫ সেশনে ছিল ১৬ দশমিক ৫৫ ভাগ, ২০১৫-১৬ সেশনে ৯ দশমিক ৯১, ২০১৬-১৭ সেশনে ৯ দশমিক ৮৩ এবং ২০১৭-১৮ সেশনে ১৪ দশমিক ৩৫ ভাগ।
এমএইচ/এনডিএস/জেআইএম