নর্থ সাউথে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমেছে
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (এনএসইউ) শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমেছে। গতকাল সংঘর্ষের পর খবর ছড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা হয়নি, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির ওপর ভিত্তি করে ক্লাস-পরীক্ষা নেয়া হবে।
মঙ্গলবার খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী আজ ক্যাম্পাসে আসেননি। এর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেকে হয়তো আতঙ্কে আসেনি। আবার অনেকে শুনেছিল বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলা আন্দোলনের সময় এমনিতেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল। এর প্রভাব এখনো কমেনি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি তা পরিষ্কার করতে আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে এনএসইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, গত কয়েকদিন থেকে রাজধানীতে যান চলাচল বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। এ কারণে নিয়মিত সব পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে, তবে ক্লাস কার্যক্রম সচল থাকলেও গতকাল সোমবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগতদের সংর্ঘষ হওয়ায় অনেকের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এমন খবর ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ সংবাদে শিক্ষার্থীরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে পরে, যার কারণে আজ মঙ্গলবার ক্লাসে গড়ে ৫০ শতাংশের কম শিক্ষার্থীর উপস্থিতি দেখা যায়। তাই মঙ্গলবারও সব পরীক্ষা স্থাগিত রাখা হয়, তবে ক্লাস নেয়া হয়েছে।
উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি, বিষয়টি পরিষ্কার করতে বোর্ড অব ট্রাস্ট্রিজ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বোর্ড সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়নি এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিকেলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল দুপুরের পর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হন। এর মধ্যে গুলশান থানার এসআই সাহানুর, ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামানও রয়েছেন। এ ঘটনায় ২০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাস স্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসচাপায় নিহত হন মিম ও করিম নামে দুই শিক্ষার্থী। ওই দুর্ঘটনায় ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী আহতও হন। এ ঘটনায় দিয়ার বাবা ওই দিনই ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করেন। দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর থেকেই নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। নিরাপত্তাহীনতার অজুহাতে ঢাকা শহরের সব রুটে কয়েকদিন বাস চলাচল বন্ধ রেখেছিলেন পরিবহন মালিকরা। সোমবার সকাল থেকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
অপরদিকে গত শনিবার বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। ছাত্ররূপী বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা এ হামলা চালায় বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। হামলাকারীদের বাধা দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
জিগাতলায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপরও হামলার ঘটনা ঘটে গত দু’দিন। এসব ঘটনার খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বেশ ক’জন সাংবাদিক।
এমএইচএম/জেডএ/পিআর