ফিটনেসবিহীন বাসই ভরসা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের
প্রতিষ্ঠার একযুগেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা নেই। প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী বাড়লেও এদের পরিবহনে ব্যবহার হচ্ছে ফিটনেসবিহীন ভাড়ায় চালিত বাস। যার অধিকাংশই সড়কে চলাচলে এবং শিক্ষার্থী পরিবহনে অনুপযোগী। ফলে বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় ৬২৮৭ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। যাদের আবাসনে রয়েছে মেয়েদের জন্য একটিসহ মাত্র চারটি হল। যা শিক্ষার্থীদের জন্য অপ্রতুল। হলে আসন না পাওয়া শিক্ষার্থীরা কুমিল্লা শহর এবং এর আশপাশ এলাকায় থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। অনাবাসিক থাকা প্রায় ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং শিক্ষার্থী পরিবহনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১৭টি বাস রয়েছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আটটি এবং বিআরটিসির ভাড়া বাস নয়টি। নিজস্ব বাসগুলোর মধ্যে চারটিই শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ। বাকি চারটি বাস শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত হলেও এর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা ব্যবহার করছেন এবং আরেকটি বাস চালক না থাকায় দীর্ঘদিন অচল হয়ে পড়ে আছে। এছাড়া বিআরটিসি এর ভাড়া বাসগুলো নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া।
বিআরটিসি থেকে ভাড়া নেয়া বাসে নিয়মিত যাতায়াতকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সানজিদা ঋতু জাগো নিউজকে জানান, বিআরটিসির বাসগুলো মহাসড়কে চলাচলে অযোগ্য। অধিকাংশ বাস ফিটনেসবিহীন। প্রায় রাস্তার মাঝখানে এগুলো বিকল হয়ে পড়ে। এতে করে ভোগান্তির পাশাপাশি সঠিক সময়ে ক্লাসে উপস্থিত হওয়া যায় না। তাছাড়া বাসের অপ্রতুলতার কারণে এসব বাসেই ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে হয়।
এছাড়া সম্প্রতি ভাড়া করা বিআরটিসির বাস চাপায় গুরুতর আহত আইন বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী শিহাব উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, বিআরটিসির বাসে উঠতে গিয়েই আমি এখন ঠিকমত হাঁটতে পারি না। কিছুদিন আগে আরেকজন আহত হলো। আমি চাই না আর কারও আমাদের মতো অবস্থা হোক।
পরিবহন সংকট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. আবু তাহের বলেন, পরিবহন স্বল্পতার কারণে শিক্ষার্থীদের নানা রকম দুর্ঘটনায় পড়তে হচ্ছে। আমরা এ সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে একটি বাসের চেচিস জাপান থেকে চলে এসেছে সেটার বডি নির্মাণের কাজ চলছে। দুই মাসের মধ্যে এই বাসটি চলে আসবে। এছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহরে নতুন বাস আনার জন্য অতিসত্ত্বর দরপত্র আহ্বান করা হবে। নতুন বাস পরিবহনের জন্য যোগ হলে কিছুটা হলেও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমে আসবে।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের পরিবহন নিয়ে অভিযোগের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং পরিবহন ব্যবস্থাপনার সমন্বয়ক ড. কাজী মো. কামাল উদ্দীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিআরটিসির বাসগুলোর ফিটনেসহীনতার কথা স্বীকার করে জাগো নিউজ বলেন, আমরা এ বিষয়ে বিআরটিসির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং খুব শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।
এমএএস/আরআইপি