মাদকে সয়লাব ইবি
মাদকে সয়লাব ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্র হাত বাড়ালেই মিলছে মরননেশা ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্য। বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া বাজরে গড়ে উঠেছে মাদকের বাজার। আর এ মাদক নিয়ন্ত্রণ করছে স্থানীয় অন্তত পাঁচটি সিন্ডিকেট। অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়েই চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ, হলের রুম কিংবা ছাদে প্রায় প্রকাশ্যেই চলছে মাদকের আড্ডা। ক্যাম্পাসের মফিজ লেক যেন মাদকসেবীদের নিরাপদ স্থান। ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের পেছনে, ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের পেছনে, ক্রিকেট ও ফুটবল মাঠে যত্রতত্র ফেনসিডিলের খালি বোতল পড়ে থাকতেও দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাঝেমধ্যে মাদকের বিরুদ্ধে ঝটিকা অভিযান চালালেও ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের প্রভাবে তা আবার ঝিমিয়ে পড়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ও মাদকসেবনকারী জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে বলেন, ‘হলের ছাত্রদের মধ্যে এখন কারা মাদক গ্রহণ করে না তা হাতে গুনে বের করা সম্ভব। প্রায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী গাঁজা সেবন করে। গাঁজা এখানে খুবই সহজলভ্য।’
ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রথমে বন্ধুদের সঙ্গে বিনামূল্যে দু'এক টান গাঁজা-ইয়াবা খেতে খেতেই এই পথে আসা। এখন আর চাইলেও সব বাদ দেয়া সম্ভব নয়।’
গত ১৫ মে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট মাঠে মাদক গ্রহণের পর ব্যবস্থাপনা বিভাগের কিছু জুনিয়র একই বিভাগের তাদের সিনিয়রদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয় বলে জানা গেছে। তাদেরই একজন বলেন, ‘গাঁজা সেবনের পর হিতাহিত জ্ঞানশূণ্য হয়ে বিভাগের ছোট ভাই যদি বেয়াদবি করে, এর থেকে কষ্টের কী থাকতে পারে।’
গত ২৪ মে হাছানুর রহমান সাদ্দাম নামে এক মাদকসেবী শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে আদালতে পাঠালে তার এক মাসের জেল হয়। এর আগেও বেশ কয়েকবার মাদকের জন্য এই শিক্ষার্থী পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদক সম্রাট বলা হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘মাদকাসক্ত এবং মাদক সম্পৃক্ত উভয়ের ব্যাপারে প্রশাসন জিরো টলারেন্স। প্রথমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে পরে অ্যাকশনে যাওয়া হবে। মাদক মুক্ত ক্যাম্পাস গড়াই আমার স্বপ্ন।’
ফেরদাউসুর রহমান সোহাগ/এফএ/আরআইপি