পরীক্ষার ১১ বান্ডেল খাতা পুড়িয়ে দিলো দুর্বৃত্তরা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে নজিরবিহীন চুরি ও পরীক্ষার খাতা পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিভাগের ২য়, ৫ম ও ৭ম সেমিস্টারের ৯টি কোর্সের খাতা পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রশাসনসহ সব মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে।
মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ১২টার দিকে সিএসই বিভাগের সভাপতির কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র।
তবে এ বিষয়ে জানতে বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. অছিয়র রহমানের মুঠোফোনে বারবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এমনকি ক্ষুদে বার্তারও কোনো উত্তর দেননি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত সভাপতির রুমের তালা ভেঙে বিভাগের তিন সেমিস্টারের ১১ বান্ডেল পরীক্ষার খাতা চুরি করে। পরে বিভাগের ছাদে নিয়ে তা পুড়িয়ে দেয়।
এদিকে এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে বিভাগের নিচে এক বান্ডেল খাতা অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে তারা বিভাগের ছাদে গিয়ে ভস্মীভূত পরীক্ষার খাতার আরও ১১ বান্ডেল দেখতে পান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভাগীয় সভাপতির কক্ষটি সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। তবে ক্যামেরা ফুটেজে রাত ১২টা ৩০ সেকেন্ডের দিকে সিসি ক্যামেরার লেন্সটি উপরের দিকে ঘুরিয়ে দেয়ার দৃশ্যটি দেখা যায়। একপর্যায়ে ক্যামেরার সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেয় দুর্বৃত্তরা। পুরো কক্ষটির অন্যান্য মূল্যবান জিনিস অক্ষত রয়েছে। কেবল আলমারির তালা কেটে খাতা নেয়ার ঘটনাটি সুপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ইতোমধ্যে এ ঘটনার মূল তথ্য উদঘাটন ও জড়িতদের চিহ্নিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. মাহবুবুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৫ (পাঁচ) কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন-সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র এবং হেলাল উদ্দীন।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র বলেন, সব কিছু অক্ষত থাকলেও কেবল খাতা নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। রাতভর পরিকল্পনা করে কেউ এ ঘটনা ঘটিয়েছে প্রাথমিকভাবে এমনটা অনুমান করা যাচ্ছে। তবে বিষয়টি পরিকল্পিত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিনা তা তদন্তের পরই জানা যাবে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা প্রধান হাটহাজারী থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছেন।
আবদুল্লাহ রাকীব/এফএ/আরআইপি