ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

ইবির শিক্ষক নিয়োগ, সবাই সবার আত্মীয়

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | ইবি | প্রকাশিত: ০৪:০৩ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে আত্মীয়করণের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩৮তম সিন্ডিকেট সভায় ৫টি বিভাগের ২২ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়।

এর মধ্যে দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হাকিম সরকারের অবৈধ একটি নিয়োগ বোর্ডকেও গতকালের সিন্ডিকেটে বৈধতা দেয়া হয়েছে।

নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের মধ্যে সাতজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক কর্মকর্তার আত্মীয়। বাকিদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষক নেতাদের নিজ এলাকার ঘনিষ্ঠজন বলে জানা গেছে।

এছাড়া এবারের শিক্ষক নিয়োগে আঞ্চলিকতার ব্যাপক প্রভাব লক্ষণীয়। স্থানীয় কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ ছাড়াও উপাচার্যের নিজ এলাকারও বেশ কয়েকজন নিয়োগ পেয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, পরিসংখ্যান বিভাগে নিয়োগ পাওয়া দু'জন প্রভাষকের মধ্যে তৌহিদুর রহমান একই বিভাগের বর্তমান সভাপতি আলতাফ হোসেনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তারা একসঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন। অন্যজন একই বিভাগের সাবেক সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক কামাল উদ্দিনের নিজ এলাকা ময়মনসিংহের ঘনিষ্ঠজন।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের নিয়োগ পেয়েছেন তিনজন প্রভাষক ও একজন সহকারী অধ্যাপক। এর মধ্যে তিনজই স্থানীয় ঝিনাইদহ জেলার। আর অন্য জনের গ্রামের বাড়ি উপাচার্যের উত্তরবঙ্গ দিনাজপুরে। আবার নিয়োগ পাওয়া সহকারী অধ্যাপক শিরিন আখতার বিথি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এ এইচ এম আক্তারুল ইসলামের ছোট বোন।

মার্কেটিং বিভাগে নিয়োগ পাওয়া তিনজন প্রভাষকের মধ্যে দু’জনের গ্রামের বাড়ি উত্তরবঙ্গে এবং একজন ঝিনাইদহ জেলার।

অর্থনীতি বিভাগে চারজনের বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে পাঁচজনকে। এ পাঁচজনই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। আবার নিয়োগ পাওয়া এ পাঁচজনের মধ্যে চারজনের বাড়িই কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহে। এদিকে শাহেদ আহমেদ বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রোজি আহমেদের ছোট ভাই।

এদিকে, দুর্নীতির দায়ে অব্যাহতি পাওয়া সাবেক উপাচার্য আবদুল হাকিম সরকারের সময়ে ২০১৫ সালের জুনে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের এক বিতর্কিত নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়। সেই বিতর্কিত নিয়োগ বোর্ডের আটজনকে গতকালের সিন্ডিকেটে অনুমোদন দেয়া হয়। বিতর্কিত এ বোর্ডে নিয়োগ পাওয়া চারজন শিক্ষক কর্মকর্তাদের আত্মীয়।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, আটজনের মধ্যে চারজন একই অনুষদের বিভিন্ন শিক্ষক নেতাদের আত্মীয়। নাজমুল হক নামে একজন অর্থ ও হিসাব শাখার বিএনপিপন্থী পরিচালক আকামদ্দীনের ভায়রা।

হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শাহজাহান আলীর জামাতা নাজমুল ইসলাম নিয়োগ পেয়েছেন। শারমীন সুলতানা নামের একজন ব্যবসা প্রশসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক কাজী আখতার হোসেনের ভাগ্নি। আর একজন ইসরাত জাহান ববি ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক জাহাঙ্গীর সাদাতের স্ত্রী।

নিয়োগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতা নিরূপণ করা হয়েছে। তাদের রেজাল্টও চমৎকার। স্থানীয় বিবেচনার ভিত্তিতে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি।

এদিকে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের নিয়োগ বোর্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের নিয়োগ বোর্ডটি সিন্ডিকেটে এজেন্ডা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। বিভাগে শিক্ষক জরুরি থাকায় সবার সম্মতিতে বোর্ডটি সম্পন্ন করা হয়। যেহেতু নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনেক সময়ের ব্যাপার।

ফেরদাউসুর রহমান সোহাগ/এএম/আরআইপি

আরও পড়ুন