চাপের মুখে রাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতির পদত্যাগ
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে চাপের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নাসিমা জামান।
রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বরাবর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান এবং বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রুহুল আমিন পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অধ্যাপক রুহুল আমিন জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রোববার দুপুরে অধ্যাপক নাসিমা জাহান উপাচার্য বরাবর সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে তিনি আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন।
তবে আজকের (রোববার) আন্দোলনের মুখে পড়ে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেননি উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ওই বিভাগের সভাপতি মূলত আন্দোলন শুরু হওয়ার আগেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু তিনি বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন দাবি করলে বিষয়টি অন্যদিকে মোড় নেয়।
জানা গেছে, রোববার বেলা ১১টার দিকে বিভাগের একাংশ শিক্ষকরা সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে বিভাগের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। এর কিছুক্ষণ পরই শিক্ষকদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আন্দোলন শুরু করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
একপর্যায়ে অধ্যাপক নাসিমা জামানকে সেমিনার কক্ষে আবদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা দেড়টার প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে পদত্যাগের বিষয় নিশ্চিত করলে তারা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেন।
বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৭ জুলাই একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুখসানা পারভীনের বিরুদ্ধে শ্রেণিকক্ষে ও শ্রেণিকক্ষের বাইরে বিভাগের শিক্ষকদের নামে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ তুলে সভাপতি নাসিমার কাছে অভিযোগ করেন বিভাগের ১১ জন শিক্ষক।
এরপর শিক্ষক রুখসানা পারভীন সভাপতির উপস্থিতিতে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের কাছে ওই ১১ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন।
এতে যৌন হয়রানি, অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ আনা হয়। রুখসানা পারভীনকে মদদ দেয়ার অভিযোগে উপাচার্য বরাবর অনাস্থা জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন ওই ১১ শিক্ষক।
এরপর থেকে ওই বিভাগের ক্লাস পরীক্ষা স্থগিত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭৫তম সিন্ডিকেট সভায় উপাচার্য তাকে পদত্যাগের জন্য অনুরোধ করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ করেননি তারা।
রাশেদ রিন্টু/এএম/আরআইপি