জবিতে ছাত্রফ্রন্টের নেতাকর্মীর ওপর ছাত্রলীগের হামলা (ভিডিও)
সান্ধ্যাকালীন কোর্স বাতিলের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রফ্রন্টের অবস্থান কর্মসূচিতে কয়েক দফা হামলা চালায় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এই হামলার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে জাগোনিউজ টোয়েন্টি ফোর ডট কমের জবি প্রতিনিধি সুব্রত মণ্ডলকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় জবি অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রলীগের সভাপতি সিরাজ জয়।
শুক্রবার সকাল ৯টায় পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করার জন্য জবি অর্থনীতি বিভাগের সামনে অবস্থান নেয় ছাত্রফ্রন্টের নেতাকর্মীরা। এরপর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ছাত্রলীগের অর্থনীতি বিভাগ শাখার বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী ছাত্রফ্রন্ট কর্মীদের ওপর কয়েক দফা হামলা চালায়।
এতে ছাত্রফন্টের জবি শাখার সহসম্পাদক আইরিন সুলতানা মিথুন, প্রচার সম্পাদক কৃষ্ণ বর্মণ, ইশকুল বিষয়ক সম্পদক সমিত ভৌমিক, সদস্য অনিমেষ রায়সহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকালে যখন ছাত্রফ্রন্টের নেতাকর্মীরা অর্থনীতি বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়ে আগত সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি পরীক্ষার্থীর মাঝে লিফলেট বিলি করে এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন ঠিক তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. নূর মুহাম্মদ এবং বিপুল পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়।
এতে সান্ধ্যকালীন কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হতে বিলম্ব হয় এবং বিভাগের প্রধান ফটক বন্ধ থাকায় পেছনের দরজা দিয়ে ভর্তি পরীক্ষর্থীরা পরীক্ষার হলে প্রবেশ করেন।
সূত্র আরো জানায়, হামলার পরে সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা এক সাংবাদিকের সঙ্গে অশুভন আচরণ করে বিভাগ ছাত্রলীগের সভাপতি।
এবিষয়ে ছাত্রফ্রন্টের জবি শাখার সভাপতি মাসুদ রানা সাংবাদিকদের বলেন, হামলার নেতৃত্বদানকারী প্রক্টরের অপসারণসহ হামলাকারী ছাত্রলীগ কর্মীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। অর্থনীতি ও কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সান্ধকালীন কোর্স অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, হামলাকরে আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন ঠেকানো যাবেনা। আমরা জগন্নাথকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হতে দিতে পারিনা। আশাকরি আমাদের এ আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিশাল সমর্থন রয়েছে।
হামলায় আহত আইরিন সুলতানা মিথুন সাংবাদিকদের বলেন, প্রক্টর স্যার পুলিশ এবং ছাত্রলীগকর্মীদের আমাদের ওপর হামলার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ওদের মেরে শুয়াইয়া ফেলো। তারপর ছাত্রলীগকর্মীরা আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. নূর মুহাম্মদ জাগোনিউজকে বলেন, কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। ছাত্রফ্রন্ট অবস্থান শেষে মিছিল করে তাদের কর্মসূচি শেষ করে। সাংবাদিককে হামলার ঘটনা ঘটে থাকলে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
হামলার নির্দেশদানের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি ঢাহা মিথ্যা কথা। আমি এই রকম কোনো নির্দেশ দেইনি।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী এই হামলা করেছে কিনা তা আমার জানা নেই । সাংবাদিককে হুমকিদানের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত শাস্তি দেবো।
সুব্রত মণ্ডল/এসকেডি/এমএস