চবির ভর্তি পরীক্ষায় ছবি পরিবর্তন হলেই ধরা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় নির্ভুল ফলাফল প্রণয়ন ও জালিয়াতি ঠেকাতে নেয়া হচ্ছে এক গুচ্ছ পদক্ষেপ। ভর্তিচ্ছু মেধাবী শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেই নেয়া হচ্ছে এ ব্যবস্থা। এর মধ্যে উত্তরপত্র ডাবল চেকের পাশাপাশি থাকছে ছবিযুক্ত আসন বিন্যাস।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিগত বছর গুলোতে প্রতিটি ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পরপরই ওএমআর মেশিনে উত্তরপত্র দ্রুতসময়ে পর্যালোচনা করে রাতের মধ্যে বা পরদিন ফলাফল প্রকাশ করা হতো। এতে করে ফলাফল প্রণয়নে ভুল বিভ্রান্তি ও মেধাবীরা অবমূল্যায়িত হওয়ার আশঙ্কা থাকতো। এসব কারণে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের বি-১ ইউনিটের ফলাফল পুনঃমূল্যায়ন করা হয়। তাই এবছর এটি নিরসনে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিটি শিক্ষার্থীর উত্তরপত্র 'ডাবল চেক' করা হবে।
এ প্রক্রিয়াতে প্রতিটি উত্তরপত্র প্রথমবার মূল্যয়ন করবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কমিটি। এরপর তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিমকে পাঠানো হবে। তারা সেটি মূল্যায়ন করে দেখবে কোনো ভুল-ভ্রান্তি আছে কি না। এরপর প্রতিটি বিষয়ের বিস্তারিতসহ চূড়ান্ত ফলাফল ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এতে সর্বোচ্চ দুই দিন সময় লাগবে।
জালিয়াতি ঠেকাতে ছবিযুক্ত আসন বিন্যাস
এবার প্রবেশপত্রে ছবি পরিবর্তন করে প্রক্সি দেয়ার সুযোগও থাকছে না। জালিয়াতি চক্রের কেউ এমন অপচেষ্টা করলেই আটকা পড়বে প্রযুক্তির জালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার মতো পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রতিটি আসনে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ছবিযুক্ত আসন বিন্যাস থাকবে। ফলে প্রকৃত শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কেউ পরীক্ষা দিতে পারবে না।
এছাড়া প্রতি বছরই ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কেন্দ্রগুলোতে কড়াকড়ি কম হওয়ায় জালিয়াতি চক্র তৎপর থাকে। এতে করে একটি অংশ জালিয়াতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলোর শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জড়িত থাকারও অভিযাগ রয়েছে। এসব অভিযোগকে আমলে নিয়ে এবার সেসব কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা ও নজরদারি বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন প্রতিটি কেন্দ্রে গোয়েন্দা টিম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হব।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড.কামরুল হুদা জাগো নিউজকে বলেন, যদি কেউ ছবি পরিবর্তন করে, সেক্ষেত্রে ভর্তির আবেদনে দেয়া মোবাইল নম্বর ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে আটক করা হবে তাকে। ছবিযুক্ত আসন বিন্যাসও থাকছে। এছাড়া উত্তরপত্র ডাবল চেকিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল নিরূপণ করা হবে। এতে ২ দিন সময় লাগতে পারে। শিক্ষার্থীদর স্বার্থেই এমন ব্যবস্থা বলে তিনি জানান।
তিনি আরো জানান, বাইরের কেন্দ্রগুলোতে জালিয়াতি ঠেকাতে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলোর কর্তৃপক্ষকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হবে। যাতে কেউ জালিয়াতির আশ্রয় নিতে না পারে।
উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ৪টি ইউনিটের মাধ্যমে ৮টি অনুষদের অধীন ৪৬টি বিভাগ ও ৫টি ইনস্টিটিউটে ৪ হাজার ৯২৪টি আসন রয়েছে। আগামী ২৬, ২৭, ২৮ ও ২৯ অক্টোবর যথাক্রমে 'সি', 'ডি', 'বি' ও 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এফএ/জেআইএম