ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

সংসারের চেয়ে ‘প্রেমকেই’ প্রাধান্য দিয়েছেন ঢাবি শিক্ষক আকিব

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | ঢাবি | প্রকাশিত: ০৭:১০ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০১৭

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আকিব উল হকের সঙ্গে অ্যাডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের এক নারী প্রভাষকের ‘প্রেমের সম্পর্ক’ দীর্ঘ দিনের। যা ভালো চোখে নেননি আকিবের স্ত্রী। বার বার অনুরোধও করেছেন ওই শিক্ষিকার সঙ্গ ত্যাগ করতে। যা নিয়ে আকিবের সঙ্গে তার স্ত্রীর নিয়মিতই ঝগড়া হতো। ঘরে ৭-৮ বছরের কন্যা সন্তান থাকলেও ওই সংসার আকিবকে টানেনি। প্রায় সময়ই বিভাগের রুমে বসে থাকতেন তিনি। গভীর রাত করে ফিরতেন ঘরে। আর ওই শিক্ষিকার সঙ্গে ‘প্রেমের সম্পর্ক’ অব্যাহত রাখেন।

অবশ্য বিভাগের সিনিয়র-জুনিয়র বেশ কয়েকজন শিক্ষক তাকে ওই শিক্ষিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছেড়ে সংসারে মনযোগী হতে পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু তা আমলে নেননি আকিব উল হক। ঘর সংসারে ছেড়ে নিয়মিত ওই শিক্ষিকাকে নিজের করে নেন। অন্যদের বলেন, ‘বর্তমান স্ত্রীর সঙ্গে তার যাচ্ছে না।’ বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

সর্বশেষ গতকাল সন্ধ্যা পৌনে ৮টার দিকে কলা ভবনে আকিবের বিভাগীয় কক্ষ-৩০৪৯ এ ওই শিক্ষিকার সঙ্গে তাকে দেখতে পান তার স্ত্রী। বেশ কয়েকদিন নজরে রাখার পর এদিন একই রুমে দুজনকে দেখতে পেয়ে ক্ষেপে যান তিনি। এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গে হাতাহাতিতেও জড়ান স্ত্রী। খবর দেন বিভাগের চেয়ারম্যানকে। বিভাগীয় চেয়ারম্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে খবর দিলে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরই মধ্যে ওই শিক্ষিকা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। অবশ্য ওই শিক্ষিকার সঙ্গে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ রেখে দেন আকিবের স্ত্রী। এর পর আকিব এবং তার স্ত্রীকে একই বিভাগের আরেক সহকারী অধ্যাপক সেলিম হোসেন প্রক্টর অফিসে নিয়ে যান। কিন্তু প্রক্টর বিষয়টির মীমাংসা করতে না পেরে উভয়কে বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠান। সেখানে কিছুটা মীমাংসা হলেও বাসায় গিয়ে ফের উদ্ধত আচরণ করেন আকিব উল হক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাইকোলজি বিভাগের এক শিক্ষক জানান, দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক থাকায় প্রায় সময় আকিব এবং তার স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকত। যদিও তাদের সংসারে একটি বাচ্চা আছে। আকিব নিয়মিতভাবে অন্য বিভাগের ওই শিক্ষিকার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। তারা উভয়ে বাইরে ঘুরতেও যেতেন। তাই বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখছিলেন আকিবের স্ত্রী।

এদিকে শুধু সাইকোলজি বিভাগ নয়, তাদের সম্পর্কের খবর জানতো অ্যাডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগেরও কয়েকজন শিক্ষক। সেখান থেকেও ওই শিক্ষিকাকেও নেষেধ করা হয় আকিবের সঙ্গ ছাড়তে। কিন্তু তিনিও সিনিয়রদের কথা কানে নেননি।

এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে আকিব উল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাৎক্ষণিক কথা বলতে পারবে না বলে ক্ষুদে বার্তা পাঠান। অন্যদিকে অ্যাডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের ওই শিক্ষিকাকে সাংবাদিক পরিচয় দিলে মুঠোফোনের সংযোগ কেটে দেন। পরবর্তীতে কল করা হলেও তিনি কল ধরেননি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এ এম আমজাদ বলেন, ওই শিক্ষক এবং তার স্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবৎ সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। তাই সন্দেহ করে এদিন শিক্ষকের বিভাগীয় কক্ষে হাজির হন। এ সময় ওই শিক্ষকের স্ত্রী সন্দেহ থেকে এমনটি করেছেন। এটা তাদের ভুল বুঝাবুঝি। ওই সময় দরজা খোলা ছিল তবে পর্দা টানানো থাকায় ওই স্যারের স্ত্রী এমন করতে পারেন বলে ধারণা প্রক্টরের।

সার্বিক বিষয়ে সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাসরীন ওয়াদুদ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ আকিবকে বিষয়টি বুঝিয়েছি। সে যেন ওই শিক্ষিকা থেকে নিজেকে ফিরিয়ে নেয়। কারণ তার একটি বাচ্চা আছে। কিন্তু সে কথা শুনেনি। আমরা বিভাগীয় সিএনডি কমিটির মিটিং ডেকেছি। সেখান থেকে পরবর্তী করণীয় ঠিক করব।

এমএইচ/এমআরএম/এএইচ

আরও পড়ুন