জুবায়ের হত্যা মামলার রায় রোববার
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ হত্যা মামলার রায় আজ (রোববার) ঘোষণা করা হচ্ছে। দীর্ঘ তিন বছর পর এ রায় ঘোষণা করা হবে। ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক এ বি এম নিজামুল হক রায় ঘোষণার জন্য ৮ ফেব্রুয়ারির দিন ধার্য করেন।
এর আগে হরতাল ও নিরাপত্তাজনিত কারণে আসামিদেরকে আদালতে হাজির করতে না পারায় রোববার রায়ের দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।
৭ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ ও ২৮ জানুয়ারি আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন এ্যাডভোকেট তাসলিমা ইয়াছমিন দিপা এবং আসামিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন এ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান ও এ্যাডেভোকেট জামান উদ্দিন আহম্মেদ।
২৮ জানুয়ারি জামিনে থাকা সাত আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠান আদালত। আসামিরা হলেন—মো. নাজমুল হুসেইন প্লাবন, শফিউল আলম সেতু, অভিনন্দন কুণ্ডু অভি, মো. মাহমুদুল হাসান মাসুদ, নাজমুস সাকিব তপু, মাজহারুল ইসলাম ও কামরুজ্জামান সোহাগ। গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে মামলার ১৩ আসামির মধ্যে সাতজন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
ওই বছরের ২৭ নভেম্বর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলায় ৩৭ সাক্ষীর মধ্যে ২৭ জন বিভিন্ন সময় ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন। মামলার উল্লেখযোগ্য সাক্ষীরা হলেন—নিহত জুবায়েরের বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাকালীন প্রাণ রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম বদিয়ার রহমান, প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন, পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক বর্তমান পিপলস ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আরজু মিঞা ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বর্তমান ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মীর শাহীন শাহ পারভেজ। তবে মামলার সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ও নিহত জুবায়েরের বান্ধবী মুশাররাত মাহেরা নিটোল সাক্ষ্য দেননি।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সাক্ষীদের মারধর করার ঘটনায় জামিন বাতিলের খবর শুনে কাঠগড়া থেকে পালিয়ে যান চার আসামি। ওই চার আসামিসহ মোট ছয়জন বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন—খন্দকার আশিকুল ইসলাম, খান মোহাম্মদ রইস, রাশেদুল ইসলাম রাজু, ইসতিয়াক মেহবুব অরূপ, মাহবুব আকরাম ও জাহিদ হাসান।
২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি বিকেলে জুবায়ের আহমেদকে প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কুপিয়ে জখম করে। পরের দিন ভোরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
জুবায়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায়। ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শাখার পেছনে নিয়ে জুবায়েরকে কুপিয়ে জখম করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। পরদিন ভোরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে ঘটনার পরের দিন আশুলিয়া থানায় ১৩ জনকে আসামি করে মামলা করে। গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪।
এএইচ/এমএস