ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

নববর্ষ ও আনন্দ শোভাযাত্রা নিয়ে কী ভাবছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা

মো. ফেরদাউস | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ০৩:১২ এএম, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

পহেলা বৈশাখ শুধু নতুন বছরের সূচনা নয়, এটি বাঙালির সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর আনন্দের প্রতিচ্ছবি। আর এ আনন্দের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজিত বর্ষবরণ শোভাযাত্রা। এবারের শোভাযাত্রায় বিশেষ মাত্রা পেয়েছে শিক্ষার্থীদের নিজস্ব ভাবনা, প্রত্যাশা ও স্বপ্ন। যেখানে তারা নিজেদের কণ্ঠে তুলে ধরছেন এক বৈচিত্র্যপূর্ণ, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও পরিবেশবান্ধব উৎসবের আকাঙ্ক্ষা।

নাম পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে শোভাযাত্রা ফিরে পেতে চাইছে তার মূল চেতনা- সবার অংশগ্রহণে এক প্রাণবন্ত ও সর্বজনীন বর্ষবরণ। শিক্ষার্থীরাও তাই নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন এমন এক মঞ্চের, যেখানে তাদের সৃষ্টিশীলতা, সামাজিক বার্তা এবং সংস্কৃতির সৌন্দর্য একসঙ্গে মিলেমিশে যায় আনন্দের ঢেউয়ে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

কথা হয় চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী কাজী সাকিবের সঙ্গে। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, চারুকলা অনুষদ চাটুকারিতা ও সমালোচিত রাজনৈতিক মোটিফ থেকে বিরত থেকে একটি সুন্দর শোভাযাত্রা উপহার দেবে এমন আশা রাখি, যা বাঙালি জাতির সঙ্গে জড়িত। পাশাপাশি বিশ্ব পরিস্থিতি ও জাতীয় পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করেও শোভাযাত্রার মোটিফ তৈরি করবে, যেমন ফিলিস্তিন ইস্যুকে প্রাধান্য দিয়ে এবার তরমুজের মোটিফ রাখা হয়েছে।

ঢাবির সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী এইচ এম মেহরাব বলেন, ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে শুরু হওয়া এই ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ সময়ের সঙ্গে পরিচিত হয় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে। সময়ের সঙ্গে শোভাযাত্রার চরিত্রে পরিবর্তন এসেছে। এতে রাজনৈতিক প্রতীক ও বার্তা যুক্ত হওয়ায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ২০২৫ সালে চারুকলা অনুষদ শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। নতুন নামের মাধ্যমে মূলত শোভাযাত্রাকে আবারও উৎসব, ঐক্য এবং সর্বজনীন অংশগ্রহণের প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। আমরা আশাবাদী, এই পরিবর্তনের মাধ্যমে শোভাযাত্রা আবারও হয়ে উঠবে আনন্দ ও ঐতিহ্যের এক সর্বজনীন উৎসব।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব বলেন, প্রথমেই মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করে আনন্দ শোভাযাত্রা করাকে স্বাগত জানাই। ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে এই আনন্দ শোভাযাত্রা হোক অন্তর্ভুক্তিমূলক। সব বিভাজন পেরিয়ে সমতা, মানবিকতা আর প্রতিবাদী চেতনায় দীপ্ত জাগ্রত সাংস্কৃতিক বার্তা নিয়ে আসুক এ বছরের শোভাযাত্রা।

বিজ্ঞাপন

মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী সালমান খান বলেন, নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানকে আগে যেমন রাজনৈতিক টুলস হিসেবে ব্যবহার করা হতো, ভবিষ্যতে যেন আর না করা হয়, সেই প্রত্যাশা করি।

কলা অনুষদের শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন প্রান্ত বলেন, পূর্ববর্তী ফ্যাসিস্ট শাসনামলে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ একসময় নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে ব্যঙ্গ করার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ২০২৫ সালের স্বৈরাচারমুক্ত বাংলায় এর নাম পরিবর্তন করে ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ রাখা হয়, যাতে এটি সর্বস্তরের মানুষের জন্য এক সর্বজনীন উৎসবে রূপ নেয়। বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য ধারণ করে পহেলা বৈশাখকে আমরা এখন আনন্দ, ঐক্য ও শান্তির প্রতীক হিসেবে উদযাপন করি। এ উৎসবের মধ্য দিয়েই নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা করছি।

এফএআর/কেএসআর

বিজ্ঞাপন