সপ্তাহের রসালাপ: শরৎচন্দ্রের বাঘ দেখা
ছেলেবেলায় শরৎচন্দ্র একবার তাঁর চার বন্ধুর সঙ্গে বাঘ দেখতে রথের মেলায় গিয়েছিলেন। মেলার একটা ফাঁকা জায়গা ত্রিপল দিয়ে ঘেরা এক পাশে একটা ছোট গেট। গেটের সামনে টুলের উপর বসে একটা লোক চিৎকার করে ডাকছে, এক পয়সায় বাঘ দেখে যান বাবু, দি রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
বাঘ দেখার জন্য সবাই লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে। বেশ বড় লাইন। এক পয়সা দিয়ে একজন করে ভেতরে ঢুকছে, সে দেখে ফিরে এসে আরেকজনকে ঢুকতে দিচ্ছে। শরৎচন্দ্র বন্ধুদের সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে গেলেন। গেটে পয়সা দিয়ে ঢুকবার সময় যে লোকটা বাঘ দেখে বেরিয়ে আসছিল তাকে বললেন, কী মশায় বাঘ কেমন দেখলেন?
লোকটা কিছু বললো না, চুপ করে সরে পড়ল। মনে মনে বললেন, না বলুক, এখনই তো দেখব। ভেতরে ঢুকে গেলেন তিনি।ঢুকে তো অবাক। বাঘের নাম গন্ধও নেই। চারদিকে ফাঁকা, এক জায়গায় শুধু একটা লোক হাঁড়ির ভেতরে মুখ ঢুকিয়ে মাঝে মাঝে বাঘের গর্জন করছে। লোকটার পাশে ছোট্ট একটা তারের খাঁচার মধ্যে হাতে তৈরি একটা বিড়াল, গায়ে ডোরাকাটা দাগ।
শরৎচন্দ্র ক্ষেপে গিয়ে যখন দু’কথা শুনিয়ে দিবেন ভাবছেন তখনই লোকটা হাঁড়ি থেকে উঠে মাথা বের করে কাছে এলো।এসেই শরৎচন্দ্রের পা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো, বাবু দয়া করে কিছু বলবেন না। বাড়িতে পনের ষোল জন ছেলে-মেয়ে। দুই ভাই এই করে আধপেটা খেয়ে বেঁচে আছি। ধরিয়ে দিলে না খেয়ে মারা যাব। শরৎচন্দ্র বেরিয়ে এলেন। বাইরের অপেক্ষমাণ লোকজন জিজ্ঞেস করলো, কী মশায় কেমন দেখলেন? শরৎচন্দ্র চুপ করে সরে পড়লেন।
লেখা: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
প্রিয় পাঠক, আপনিও অংশ নিতে পারেন আমাদের এ আয়োজনে। আপনার মজার (রম্য) গল্পটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়। লেখা মনোনীত হলেই যে কোনো শুক্রবার প্রকাশিত হবে।
কেএসকে/জিকেএস