ফুলকপি ও লাউশাক চাষে হাসি ফুটেছে হাবিবের মুখে
সারাবছর কোনোভাবে চাষাবাদ করে টিকে থাকলেও শীতের মৌসুমে বেশি লাভের আশায় তাকিয়ে থাকেন তারা। তেমনই একজন চাষি মো. হাবিব। বয়স তার ৫৫ পেরিয়েছে। এর মধ্যে ২০ বছর ধরে কৃষিকাজ করছেন। লাভবান মৌসুমি ব্যবসায়ীদের মধ্যে তিনি একজন। এবারও তার জমিতে ভালো ফলন হয়েছে। চাষ করেছেন ফুলকপি আর লাউশাক। সবুজ রঙের ফসলে ছেয়ে গেছে তার আড়াই বিঘা জমি।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বৈদ্দেরবাজার ইউনিয়নের হামছাদী পশ্চিমপাড়া গ্রামের সাইজুদ্দিনের ছেলে হাবিব। তিনি শুধু মৌসুমি চাষিই নন, বছরজুড়েই চাষাবাদ করেন। এবারের শীতকালীন সবজি হিসেবে নিজের আড়াই বিঘা জমিতে ফুলকপি আর লাউশাক চাষ করেছেন। এই সবজি চাষেই তার মুখে হাসি ফুটেছে। আগমী ১৫ দিনের মধ্যে জমির সব শাক উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করবেন।
সবজি চাষে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই কৃষক। ফসলে জৈব, টিএসপি আর গোবর সার প্রয়োগ করা হয়। মূলত এসব শাক উত্তোলনযোগ্য হতে কমপক্ষে ৪০-৪৫ দিন সময় লাগে। যার মধ্যে তার ফসলের বয়স ১ মাস অতিবাহিত হয়েছে। নিয়মিত পানি দেওয়া আর দেখভালে চোখ জুড়ায় তার ফসলে।
কৃষক হাবিব জানান, চারা রোপণ থেকে উত্তোলন পর্যন্ত পরিশ্রমের ত্রুটি রাখতে রাজি নন তিনি। পেশাদার কৃষক হিসেবে প্রতি বছরই লাভবান হোন। এবারও ৫০ হাজার টাকা লভ্যাংশ পাবেন। চাষাবাদের সবজি অন্তত ১ লাখ টাকার বেশি বিক্রি হবে। জমিতে ২ হাজারেরও বেশি ফুলকপি আর লাউশাক আছে। গত বছরের তুলনায় ফলনও বেশ ভালো। নিয়মিত যত্ন নিচ্ছেন। দেড় বিঘা জমিতে ফুলকপি আর ১ বিঘায় লাউশাক চাষ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘কৃষকের খাতায় নাম লেখানোর আগে বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি ছোটখাটো ব্যবসা করেছি। কিন্তু তাতে সফলতার মুখ দেখিনি। এরপর যখন চাষাবাদ শুরু করি; তখন জীবনের মোড় ঘুরতে শুরু করে। এখন এ পেশায় ভালোভাবে জীবনযাপন করছি। ৩ সন্তান আর স্ত্রী নিয়ে সুখের সংসার। ফসল ওঠানোর পর গ্রামের দুলালপুর বাজারে পাইকারি বিক্রি করবো।’
সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরোজ সুলতানা বলেন, ‘এবার ফুলকপি আর লাউশাকের ফলন ভালো হয়েছে। বর্তমানে সোনারগাঁয়ে মোট ৯ হাজার ২২০ হেক্টর কৃষিজমি আছে। আমরা নিয়মিত সব ধরনের কৃষকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমরা পণ্য দেখে সুবিধা দেওয়ার কথা ভাবি না। মূলত সব কৃষিপণ্য চাষিদের সেবা দিই। রোগবালাইমুক্ত চাষাবাদের পাশাপাশি ভালো ফলনের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি।’
মো. আকাশ/এসইউ/জিকেএস