ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

প্রায় ২ লাখ ৭২ হাজার গাছ

চুয়াডাঙ্গায় ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন খেজুর গুড়ের আশা

হুসাইন মালিক | চুয়াডাঙ্গা | প্রকাশিত: ০৫:৩৯ পিএম, ১২ নভেম্বর ২০২৪

শীতের মৌসুম পুরোদমে শুরু হয়নি এখনো। তারপরও আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্য খেজুরের রস আহরণে গাছ প্রস্তুত করছেন শিউলিরা (গাছি)। চুয়াডাঙ্গা জেলায় শীতের আগমন উপলক্ষে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।

জানা যায়, এ বছর জেলায় ২ লাখ ৭১ হাজার ৯৬০টি গাছ থেকে ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সুস্বাদু এ গুড় এলাকার চাহিদা মিটিয়ে সারাদেশে সরবরাহ করা হয়। প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ১০ কেজি গুড় পেয়ে থাকেন গাছিরা।

জেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামে খেজুর রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিউলিরা। কিছুদিন পর গাছ থেকে রস সংগ্রহের পর্ব শুরু হবে। খেজুর রস ও গুড়ের জন্য এ জেলা বিখ্যাত।

চুয়াডাঙ্গায় ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন খেজুর গুড়ের আশা

জমির আলী নামের এক শিউলি বলেন, ‘খেজুর গাছ কাটা সহজ কাজ নয়। অনেক সময় গাছের ওপর থাকা অবস্থায় ভারসাম্য রক্ষা করাটাই কঠিন হয়ে যায়। শীতের শুরুতে রস সংগ্রহ করে পরিবারের জন্য কিছু সঞ্চয় করতে পারলে কষ্টটা সার্থক হয়।’

আরও পড়ুন

সদর উপজেলার দীননাথপুর গ্রামের সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘গাছের ডালপালা পরিষ্কার ও চাঁছার কাজ হয়ে গেছে। বাপের পেশা এখনো ধরে রেখেছি। আমার ৮০টি গাছ ছিলার কাজ হয়েছে। তারপর ঘাট কেটে রাখা হবে। আমার জমির আইলে নিজের গাছ আছে ৪০টি। আরও ৪০টি গাছ বর্গা নিয়েছি। শীত মৌসুমে দাম ভালো থাকলে গাছ থেকে প্রায় ২ লাখ টাকার মতো গুড় বিক্রি করতে পারবো।’

মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমরা পেশাগত কারণে প্রায় প্রতি বছরই খেজুর গাছ চার মাসের জন্য বর্গা নিয়ে থাকি। গাছভেদে ২ কেজি করে গুড় ও ২৫০ টাকা দিতে হয় মালিকদের। এবারও প্রায় ১০০টি গাছের জন্য মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করেছি। বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে না দিয়ে জীবন-জীবিকার জন্য ধরে রেখেছি।’

চুয়াডাঙ্গায় ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন খেজুর গুড়ের আশা

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, ‘এ বছর ৪টি উপজেলায় ২ লাখ ৭১ হাজার ৯৬০টি খেজুর গাছ আছে। এরমধ্যে সদরে ৯৮ হাজার ৫০০টি, আলমডাঙ্গায় ৪৫ হাজার ৪১০টি, দামুড়হুদায় ৯০ হাজার ২০০টি ও জীবননগরে ৩৭ হাজার ৮৫০টি আছে। এ বছর ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টনের ওপরে গুড় উৎপাদন হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অতীতে জেলায় শীতকালে রস সংগ্রহ আরও বেশি হতো। ইট ভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করায় বর্তমানে দিন দিন গাছের পরিমাণ কমছে। এখনো শীতকালে শহর থেকে মানুষ ছুটে আসে গ্রামে খেজুর রস খেতে। শীতের মৌসুমে চলে রস, গুড়, পিঠা, পুলি ও পায়েস খাওয়ার পালা। এ ছাড়া খেজুর পাতা দিয়ে আকর্ষণীয় ও মজবুত পাটি তৈরি হয়।’

এসইউ/এমএস

আরও পড়ুন