কার্তিক মাসে চাষ করুন শাক-সবজি
কার্তিক মাস হচ্ছে বর্ষা ও শীতের মিলনের মুহূর্ত। বাংলাদেশের কৃষি ও প্রকৃতি দেখার সবচেয়ে সুন্দর সময় এই মাস। শীত আসি আসি করলেও শীতের শাক-সবজি চাষের এখনই সময়। তাই আসুন জেনে নিই কার্তিক মাসে কোন কোন শাক-সবজি চাষ করতে হবে।
শাক-সবজি
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বীজতলায় উন্নত জাতের দেশি-বিদেশি ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, শালগম, বাটিশাক, টমেটো, বেগুনের চারা উৎপাদনের জন্য বীজ বপন করতে হবে। গত মাসে চারা উৎপাদন করে থাকলে মূল জমিতে চারা রোপণ করতে পারেন।
মাটিতে জোঁ আসার সাথে সাথে শীতকালীন শাক-সবজি রোপণ করতে হবে। এ মাসে হঠাৎ বৃষ্টিতে রোপণ করা শাক-সবজির চারা নষ্ট হতে পারে। এ জন্য পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। রোপণের পর আগাছা পরিষ্কার, সার প্রয়োগ, সেচ নিকাশসহ প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করতে হবে। তাছাড়া লালশাক, মুলাশাক, গাজর, মটরশুঁটির বীজ এ সময় বপন করা যেতে পারে।
গোল আলু
গোল আলুর জন্য জমি তৈরি ও বীজ বপনের উপযুক্ত সময় এখন। হালকা মাটি অর্থাৎ বেলে দোআঁশ মাটি আলু চাষের জন্য উপযোগী। বারি উদ্ভাবিত আগাম জাত ও উচ্চফলনশীল জাতগুলো নির্বাচন করা দরকার। এ ছাড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ, রপ্তানি ও খাবার উপযোগী জাত নির্বাচন করা জরুরি।
প্রতি একর জমি চাষ করতে ৬০০ কেজি বীজ আলুর দরকার হয়। ১ একর জমিতে আলু চাষ করতে ১৩০ কেজি ইউরিয়া, ৯০ কেজি টিএসপি, ১০০ কেজি এমওপি, ৬০ কেজি জিপসাম এবং ৬ কেজি দস্তা সার প্রয়োজন হয়। তবে এ সারের পরিমাণ জমির অবস্থাভেদে কমবেশি হতে পারে। তাছাড়া একরপ্রতি ৪-৫ টন জৈবসার ব্যবহার করলে ফলন অনেক বেশি পাওয়া যায়।
আলু উৎপাদনে আগাছা পরিষ্কার, সেচ, সারের উপরিপ্রয়োগ, মাটি আলগাকরণ বা কেলিতে মাটি তুলে দেওয়া, বালাই দমন, মালচিং করা আবশ্যকীয় কাজ। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে বিনা চাষে মালচিং দিয়ে আলু আবাদ করা যায়।
মিষ্টিআলু
নদীর ধারে পলি মাটিযুক্ত জমি এবং বেলে দোআঁশ মাটিতে মিষ্টিআলু ভালো ফলন দেয়। কমলাসুন্দরী, বারি মিষ্টিআলু-১২, বারি মিষ্টিআলু-১৪, বারি মিষ্টিআলু-১৫, বারি মিষ্টিআলু-১৬ ও বারি মিষ্টিআলু-১৭ আধুনিক মিষ্টিআলুর জাত। প্রতি বিঘা জমির জন্য ৩ গিঁটযুক্ত ২২৫০-২৫০০ খণ্ড লতা পর্যাপ্ত। বিঘাপ্রতি ৪-৫ টন গোবর বা জৈবসার, ১৬ কেজি ইউরিয়া, ৪০ কেজি টিএসপি, ৬০ কেজি এমওপি সার দিতে হবে।
তথ্যসূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস
এসইউ/জিকেএস