ফুলে-ফলে ভরা গ্রীষ্মকাল
আব্দুল্লাহ নাজিম আল মামুন
বাংলা বারো মাসের ছয় ঋতুর মধ্যে অন্যতম প্রধান ও প্রথম ঋতু গ্রীষ্মকাল। তপ্ত রোদ আর দখিনা হাওয়ায় আমাদের জীবনকে দোলা দিয়ে যায়। বৈশাখ আর জ্যৈষ্ঠ মাস মিলে গ্রীষ্মকাল। এ সময়ে বাংলার প্রকৃতিতে অনেক পরিবর্তন দেখা যায় গাছে, ফুলে-ফলে। মাঝে মাঝে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে বৃষ্টি নামে ধরণীর বুকে। বৃষ্টির প্রভাবে গাছের ডালে নতুন পাতা গজায় সবুজ-শ্যামলে।
দেখতে কী যে সুন্দর লাগে! দেখেই যেন সহজেই চোখ জুড়িয়ে যায়। অন্যদিকে প্রখর রোদের কারণে গাছে গাছে ফল পাকতে শুরু করে। এর মধ্যে আম, জাম, লিচু ও কাঁঠাল হচ্ছে সর্বাধিক পরিচিত ফল। গ্রীষ্মকালে নানা ধরনের ফল পাকতে শুরু করে। যেমন- তরমুজ, আনারস, তাল, পেঁপে, বেল ইত্যাদি।
এদিকে আবার বসন্তকালে কোকিলের দেখা বেশি মিললেও বৈশাখ মাসে কিছু কোকিলের দেখা মেলে। তাদের ডাকে আমাদের ঘুম ভাঙে। অন্যদিকে কাগজে-কলমে বসন্ত ঋতুরাজ হলেও মূলত পুষ্প উৎসবের ঋতু গ্রীষ্মকালকেও বলা যায়। এ মৌসুমে গাছে গাছে চটকদার রঙের যে উন্মাদনা চলে, তা অন্য ঋতুতে প্রায় অনুপস্থিত দেখা যায়।
আরও পড়ুন
গ্রীষ্মের পুষ্পবীথির রং এতই আবেদনময়ী যে চোখ ফেরানো অসম্ভব। গ্রীষ্মের পুষ্পতালিকায় প্রথম স্থান কৃষ্ণচূড়ার। ফুলটির রং এতই তীব্র যে অনেক দূর থেকেও চোখে পড়ে। সমকক্ষ এমন দূরভেদী আরেকটি ফুল শিমুল। কিন্তু কৃষ্ণচূড়া সে তুলনায় আরও বেশি আকর্ষণীয়।
কৃষ্ণচূড়া আর শিমুল ছাড়াও গ্রীষ্মকালে নানা রকম ফুলের দেখা মেলে। এর মধ্যে জারুল, জিনিয়া, অর্জুন, ইপিল, কনকচূড়া, করঞ্জা, কামিনী, ক্যাজুপুট, গাব, জারুল, জ্যাকারান্ডা, তেলসুর, দেবদারু, নাগকেশর, নাগেশ্বর, নিম, পরশপিপুল, পলকজুঁই, পাদাউক, পারুল, পালাম, বনআসরা, বরুণ, বাওবাব, বেরিয়া, মাকড়িশাল, মিনজিরি, মুচকুন্দ, মেহগনি, রক্তন, সোনালু, স্বর্ণচাঁপা অন্যতম।
এই ঋতুতে ফল-ফুলের ঘ্রাণে আমাদের জীবন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। প্রকৃতির এক পরম আতিশয্য আমাদের ঘিরে রাখে। বছরের শুরুতেই যেন প্রকৃতিতে নব জীবন আনে। বৈচিত্র্যময় আমাদের ঋতুর বৈচিত্র্য ক্রমান্বয়ে বাড়তেই থাকে। এই আনন্দময় ভরপুর প্রকৃতি নিয়ে আমরা গর্বিত।
লেখক: কবি ও ফিচার লেখক।
এসইউ/জিকেএস