পেঁয়াজ বীজের দাম বেশি, চাষে বাড়ছে খরচ
রাজবাড়ী জেলা পেঁয়াজ চাষের জন্য সমৃদ্ধ। এ জেলায় সারাদেশের প্রায় ১৬ শতাংশ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। দেশের মধ্যে পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয় জেলাটি। চলতি মৌসুমে বৃষ্টির কারণে দেরিতে শুরু হলেও বিভিন্ন স্থানে মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত আছেন চাষিরা।
রোপণ থেকে আগামী ৩ মাস পর বাজারে উঠবে এ পেঁয়াজ। এতে কিছুটা হলেও চাহিদা মিটবে। তবে বীজ, মজুরিসহ অন্য কৃষি উপকরণের দামে বেড়ে যাওয়ায় বাড়ছে খরচও। তারপরও একটু লাভের আশায় পেঁয়াজ চাষ করছেন তারা। প্রতি মণ পেঁয়াজের বাজার মূল্য ২ থেকে ২ হাজার ৫০০ হলে কৃষকেরা লাভবান হবেন।
জানা গেছে, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণ শুরু করেন চাষিরা। এ বছর অতিবৃষ্টিতে পিছিয়ে গেছে মুড়িকাটা পেঁয়াজের চাষ। বৃষ্টির পর জমি প্রস্তুত করতে ১৫-২০ দিন পিছিয়ে গেছে। অন্য বছর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের দিকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে উঠলেও এ বছর ডিসেম্বরের শেষে ওঠার সম্ভাবনা আছে।
আরও পড়ুন: শীতকালীন সবজিতে ভাগ্য ফিরেছে জাজিরার চাষিদের
এদিকে এক বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ করতে চাষিদের বীজ কেনা, জমি তৈরি, সেচ, কীটনাশক প্রয়োগ, রোপণসহ বাজারজাত পর্যন্ত প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। ফলন ভালো হলে (৩৩ শতাংশ) এক বিঘায় ৫০-৭০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হবে।
এ বছর রাজবাড়ী জেলায় প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বেশিরভাগ উঁচু জমিতে এ পেঁয়াজের চাষ করছেন কৃষকেরা। মুড়িকাটা পেঁয়াজের পর শুরু হবে হালি পেঁয়াজের আবাদ।
রাজ্জাক মন্ডল, নিজাম মন্ডল, ফজলুল হক, জাকিরসহ একাধিক পেঁয়াজ চাষি বলেন, ‘এবার এক মণ পেঁয়াজ বীজের দাম পড়ছে ৫ হাজার টাকা। এছাড়া সব কিছুর দাম বেশি। যে কারণে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাছাড়া অতিবৃষ্টির কারণে রোপণও দেরিতে শুরু হয়েছে। আশা করি, কোনো দুর্যোগ না হলে ফলন ভালো হবে। তবে প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম ২ হাজার থেকে ২৫০০ হলে কৃষক লাভবান হবে।’
আরও পড়ুন: দ্বিগুণ লাভের আশায় আগাম আলু চাষ
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম রাসূল বলেন, ‘এ বছর আবাদ একটু দেরিতে শুরু হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। জেলায় প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদন হবে। ফলে অন্য বছরের তুলনায় মুড়িকাটা পেঁয়াজে লাভবান হবেন চাষিরা।’
রুবেলুর রহমান/এসইউ/জিকেএস