যশোরে আঙুর চাষে সফল মহাসিন আলী
যশোরের শার্শা উপজেলার গোগা ইউনিয়নের ইছাপুর গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে ভারতীয় চয়ন জাতের আঙুর ফলের চাষ করে সফল হয়েছেন মহাসিন আলী (৩৫)। প্রতিদিন মানুষ আঙুর বাগান দেখতে ভিড় করছেন তার জমিতে।
বছরে তিনবার ফলন ধরে আঙুর গাছে। প্রথম ধাপে কম ফলন হলেও পরে প্রত্যেক গাছ থেকে প্রায় ২-৩ মণ করে আঙুর বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি।
উপজেলার ইছাপুর গ্রামের মহাসিন আলী ১৫ শতাংশ জমির ওপর এ দৃষ্টিনন্দন আঙুর বাগান গড়ে তুলেছেন। যার প্রায় গাছের ব্যাপক ফলন দেখা যায়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ভাইরাসের কারণে কিছু আঙুরে কালো স্পট দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে কিছুটা চিন্তিত তিনি।
এর আগে শার্শার বেশ কয়েকটি এলাকায় আঙুর চাষ হলেও তা সুস্বাদু ছিল না। তবে মহাসিন আলী এবারই প্রথম এ চাষে সফল হয়েছেন বলে দাবি করেন। জমিতে গাছ রোপণের মাত্র ২-৩ মাসে ফল আসতে শুরু করে।
স্বাদের দিক থেকে কিছু আঙুর প্রচণ্ড টক আবার কিছু আঙুর মিষ্টি। মহাসিন আলী মিষ্টি আঙুর চাষ করে প্রমাণ করলেন এ মাটিতে মিষ্টি ও সুস্বাদু আঙুর উৎপাদন সম্ভব। স্থানীয়রা বাণিজ্যিকভাবে এ আঙুর চাষ করলে এটি জনপ্রিয় হবে। সেইসঙ্গে আঙুর চাষ লাভজনক বাণিজ্যে রূপ নেবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখবে। তার দেখাদেখি এখন শার্শায় অনেকে আঙুর চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
মহাসিন আলী বলেন, ‘ইউটিউবে এক বছর আগে দেখেছিলাম, বাংলাদেশের মাটিতে মিষ্টি আঙুর চাষ হচ্ছে। তাই আগ্রহী হয়ে ২০২১ সালের শেষদিকে ১৫ শতাংশ জমির পরিচর্যা ও প্রস্তুতি নিই। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঝিনাইদহ জেলা থেকে ভারতীয় চয়ন জাত সংগ্রহ করে ৩৬টি চারা রোপণ শেষে পরিচর্যা শুরু করি। জমিতে শুধু পানি ও জৈব সার ব্যবহার করেছি। রোপণের তিন মাসেই গাছে ফুল আসে। আট মাসের মধ্যেই আঙুর আসে। এতে খরচ হয়ছে ৯০ হাজার টাকা।’
তিনি বলেন, ‘এ আঙুর বাজারজাত করার মতো পরিপক্ক হলে অবশ্যই মিষ্টি সুস্বাদু হবে। মিষ্টি আঙুর ফলের গাছ থেকে বিপুল পরিমাণের চারা গাছ তৈরি করে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন ও সরবরাহের পরিকল্পনা চলছে। স্থানীয়ভাবে আঙুর চাষ হলে ফরমালিনমুক্ত ও কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি ছাড়া মানসম্মত ফল পাওয়া যাবে। সরকারি-বেসরকারিভাবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহযোগিতা করা হলে আর্থিক লাভবান হওয়া যাবে। পাশাপাশি বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী হওয়ার পথ সুগম হবে।’
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ কুমার মন্ডল বলেন, ‘আমরা আঙুর চাষের খবরটি শুনেছি। এখন আঙুর চাষে প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বাদ বাড়ানো যায় কি না চেষ্টা করতে হবে। এ বিষয়ে কৃষক মহাসিনকে সব সময় কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা করা হবে।’
মো. জামাল হোসেন/এসইউ/জিকেএস