উচ্চফলনশীল জাতের আবাদ
তিন বছরে ধানের উৎপাদন বাড়বে সাড়ে ৩৩ লাখ টন
উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষ সম্প্রসারণ করা গেলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে হেক্টরপ্রতি উৎপাদনশীলতা ৪ দশমিক ৬০ টনে উন্নীত করা সম্ভব।
যাতে বোরোর মোট উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে ১৪ দশমিক ৩৮ লাখ টন। একইভাবে আমনের হেক্টরপ্রতি উৎপাদনশীলতা ২ দশমিক ৯৫ টন থেকে বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৪৪ টনে নেওয়া সম্ভব। এতে উৎপাদন বাড়বে ১৪ দশমিক ৬৩ লাখ টন।
এছাড়া আউশ মৌসুমে ৩ দশমিক ৬২ লাখ টন ধানের উৎপাদন বাড়ানো যাবে। অর্থাৎ তিন বছরে ধানের সার্বিক উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে প্রায় সাড়ে ৩৩ লাখ টন।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর খামারবাড়িতে কেআইবি অডিটোরিয়ামে এক কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এ কর্মশালার আয়োজন করে।
কর্মশালায় বলা হয়, দুই যুগের বেশি সময় ধরে চাষ করা ব্রি-২৮, ব্রি-২৯ জাতগুলোর রিপ্লেস করে ব্রি-৮৯, ব্রি-৯২, বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ সহ বিভিন্ন উচ্চফলনশীল জাতের চাষ সম্প্রসারণ পরিকল্পনা অনুযায়ী করা গেলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে হেক্টরপ্রতি উৎপাদনশীলতা চার টন থেকে বাড়িয়ে ৪ দশমিক ৬০ টনে উন্নীত করা সম্ভব। ফলে এই সময়ে বোরোর মোট উৎপাদন ১৪ দশমিক ৩৮ লাখ টন বাড়ানো যাবে।
একইভাবে জাতের পরিবর্তন করে আমনের হেক্টরপ্রতি উৎপাদনশীলতা ২ দশমিক ৯৫ টন থেকে বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৪৪ টনে নেওয়া সম্ভব। যাতে করে উৎপাদন বাড়বে ১৪ দশমিক ৬৩ লাখ টন। আউশ মৌসুমেও একই কাজ করে ৩ দশমিক ৬২ লাখ টন ধানের উৎপাদন বাড়ানো যাবে।
ব্রি’র উপস্থাপনায় বলা হয়, ধানের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য প্রথমে ভ্যারাইটির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। উৎপাদন ব্যবস্থার উন্নয়ন, অব্যবহৃত জমি চাষের আওতায় আনা, প্রচলিত শস্যবিন্যাসের পরিবর্তন করে উৎপাদন বাড়াতে হবে।
ডিএইর প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে প্রচলিত শস্যবিন্যাস হলো আমন-পতিত-বোরো চাষ। এ শস্যবিন্যাসের পরিবর্তন করে আমনে স্বল্পকালীন ধান চাষ, তারপর পতিত না রেখে স্বল্পকালীন উন্নত জাতের তেলফসলের চাষ এবং তারপর বোরো চাষ করা সম্ভব।
ভোজ্যতেলের বিষয়ে প্রবন্ধে বলা হয়, নতুন শস্যবিন্যাস আমন-সরিষা-বোরো প্রচলনের মাধ্যমে ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে তেলফসলের উৎপাদন ২৪ লাখ টন বাড়ানো সম্ভব, যা বর্তমান উৎপাদনের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি। ফলে তিন বছরের মধ্যেই ভোজ্যতেলের চাহিদার শতকরা ৪০-৫০ ভাগ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা সম্ভব।
‘বিদ্যমান শস্য বিন্যাসে তৈল ফসলের অন্তর্ভুক্তি এবং ধান ফসলের অধিক ফলনশীল জাতসমূহের উৎপাদন বৃদ্ধি’ শীর্ষক কর্মশালায় ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। আরও ছিলেন কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রি’র মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রি’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও রাইস ফার্মিং সিস্টেমস ডিভিশনের প্রধান মো. ইব্রাহিম এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক হাবিবুর রহমান চৌধুরী।
এনএইচ/জেডএইচ/জিকেএস