ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

রোপা আমন ধান চাষে ঝুঁকছেন ভৈরবের চাষিরা

উপজেলা প্রতিনিধি | ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) | প্রকাশিত: ০২:৫৫ পিএম, ০৫ অক্টোবর ২০২২

এবারের বর্ষার শেষ দিকে বাড়তি ফসল হিসেবে রোপা আমন ধান চাষে ব্যস্ত রয়েছেন ভৈরবের চাষিরা। জানা গেছে, এ বছর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রোপা আমন ধান চাষ করা হয়েছে। সেসব রোপণ করা জমিতে দিনভর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

রোপা আমন চাষে এক কানি বা (২০ শতাংশ) জমিতে ১৮ থেকে ২০ মণ ধান উৎপন্ন হয় এবং ৯০ দিনে ফলন পাওয়া যায়। বাজারে এ ধানের চাহিদা থাকায় দামও ভালো পাওয়া যায়। তাই কৃষকদের এ ধান চাষে আগ্রহ বাড়ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভৈরব উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামে কয়েক হাজার শতাংশ জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করা হয়েছে। এসব রোপণ করা জমিতে দিনের প্রখর রোদ উপেক্ষা করে জমিতে কেউ কীটনাশক দিচ্ছেন, কেউ জমিতে সার প্রয়োগ করছেন, কেউ আবার জমিতে আগাছা নিধনে ব্যস্ত রয়েছেন।

বাজারে চালের দাম বেশি থাকায় এবং এ ধানের চাহিদা থাকায় এ ধান চাষ করে লাভবান হবে বলে আশা করছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। তাই দিন দিন এ ধান চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। তবে কৃষি অফিস বলছে এ ধান চাষে অল্প খরচে কম সময়ে বেশি ফলন ও বাজার দর ভালো থাকায় কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় এ ধানের ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ সময় এই প্রতিনিধির কথা হয় স্থানীয় কৃষক ইউসুফ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, বর্ষার শেষে এই সময়ে জমিতে সাধারণ মাসকালাই, সরিষা আবাদ করা হত। কিছু জমিতে ধান চাষ হত। কিন্তু এ বছর বর্ষার পানি দ্রুত সময়ে চলে যাওয়ায় আমরা সেসব জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বছরের এই সময়ে বোনাস ফসল হিসেবে ঘরে তুলতে পারবেন বলে তিনি জানান।

প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও দশ একর জমিতে রোপা আমন ধান রোপণ করেছেন উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের কৃষক বাছির ভূইঁয়া। তিনি বলেন, প্রতি বছরই আমি বর্ষার শেষে রোপা আমন ধান চাষ করি। কারণ রোপা আমন ধান চাষে খরচ কম লাগে। আবার অল্প সময়ে বাড়তি ফসল হিসেবে ধান ঘরে তুলতে পারি। আবহাওয়া ঠিক থাকলে প্রত্যাশা অনুযায়ী ফসল ফলবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন তিনি।



সাদেকপুর গ্রামের আরেক কৃষক হাসিম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আগে আমরা এসব জমিতে সরিষা বা অন্য ফসল চাষ করতাম। এসব ফসল উৎপাদনে খরচ বেশি পড়ত। এ বছর এসব জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত রোপণ করা জমিতে তেমন কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি। তবে রোপণ করা জমিতে যেন কোনো ধরনের রোগবালাই ও পোকামাকড় না ধরতে পারে সেজন্যই জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন তিনি।

এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আকলিমা বেগম জানান, এ বছর রোপা আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২৩০ হেক্টর জমি কিন্তু অর্জিত হয়েছে ২২৭০ হেক্টর জমি। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভৈরবের কৃষকরা বাড়তি ফসল হিসেবে রোপা আমন ধান চাষে আগ্রাহী হয়ে উঠেছেন। ভৈরবে বোরো ধান প্রধান ফসল হিসেবে কৃষকরা বেশি আবাদ করে থাকেন। বছরের এই সময়ে জমি পতিত না রেখে কৃষদের মাঝে রোপা আমন ধান চাষে আগ্রহ বাড়ছে।

এখন বাড়তি ফসল হিসেবে রোপা আমন ও সরিষা চাষিদের সরকারিভাবে প্রণোদনাসহ আমাদের মাঠ পর্যায়ে কর্মীরা সার্বক্ষণিক রোগ আক্রমণ প্রতিরোধে সহযোগিতা প্রদান করে থাকে। এছাড়া কিভাবে চাষিরা তাদের জমিতে বেশি ফসল উৎপাদন করতে পারে সে বিষয়ে কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে থাকেন বলে তিনি জানান।

রাজীবুল হাসান/এমএমএফ/এএসএম

আরও পড়ুন