আবহাওয়ার পূর্বাভাস ভিত্তিক ধান উৎপাদনে ব্রি’র পরামর্শ
আবহাওয়ার পূর্বাভাস ভিত্তিক ধান উৎপাদন ব্যবস্থাপনা জানিয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউট (ব্রি) এগ্রোমেট ল্যাব।
সংস্থাটি বলছে, সারাদেশে যে আবহাওয়া বিরাজ করছে তাতে আগামী ৭ দিন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। কাজেই সর্বোচ্চ কুশি পর্যায় অবস্থায় ধান গাছে সেচ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা:
এ পর্যায়ে ধানে বাদামি গাছফড়িং, মাজরা, পাতা মোড়ানো পোকা, পামরী এবং গলমাছি পোকার আক্রমণ হতে পারে। ক্ষেত্র বিশেষে টুংরো রোগের উপস্থিতিও দেখা যেতে পারে। জমিতে দীর্ঘ সময় পানি জমে থাকলে চুঙ্গি পোকার আক্রমণ হতে পারে।
জমিতে আলোক ফাঁদ (পামরি ব্যতিত) ব্যবহার করা, নিয়মিত জমি পর্যবেক্ষণ করা, ডালপালা পুঁতে দেওয়া, হাত জাল দিয়ে পোকা ধরা, ডিম ও কীড়া ধ্বংস করা, মধ্যকুশি থেকে সর্ব্বোচ্চ কুশি পর্যায়ে গলমাছির আক্রমণ অর্থাৎ পেঁয়াজ পাতা দেখা যেতে পারে।
কাজেই মাজরা ও গলমাছি পোকা নিয়ন্ত্রণের জন্য অনুমোদিত সিস্টেমিক বা অন্তপরিবাহী কীটনাশক যেমন কার্টাপ প্লাস / ভিরতাকো/ডায়াজিনন/কার্বোফুরান/মেলাথিয়ন/ডার্সবার্ন ইত্যাদি পরিমিত মাত্রায় ব্যবহার করা যেতে পারে। এসময়ে জমির শতকরা ৫০ ভাগ গোছায় ২ থেকে ৪টি ডিমওয়ালা স্ত্রী বাদামি/সাদা পিঠ গাছফড়িং বা ১০ থেকে ১৫টি বাচ্চা পোকা বা উভয়ই দেখা গেলে প্লেনাম/এবামেক্টিন/সফসিন/মিপসিন/পাইমেট্রোজিন ইত্যাদি কীটনাশক পরিমিত মাত্রায় গাছের গোড়ায় ব্যবহার করা যেতে পারে।
টুংরো নিয়ন্ত্রণের জন্য ওই রোগ বিস্তারকারী ভেক্টর সবুজ পাতাফড়িংকে আলোক ফাঁদ বা কীটনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
রোগবালাই ব্যবস্থাপনা:
বর্তমানে সারাদেশে যে আবহাওয়া বিরাজ করছে এবং ধান গাছের বর্তমান বৃদ্ধি পর্যায়ে খোলপোড়া, ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতাপোড়া এবং বাকানি রোগ দেখা দিতে পারে। খোলপোড়া এবং ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতাপোড়া রোগের প্রাথমিক অবস্থায় জমিতে বিঘা প্রতি অতিরিক্ত ৫ কেজি পটাশ সার এবং ৪ কেজি জিপসাম ব্যবহার করে জমির পানি শুকিয়ে দিতে হবে। আর বাকানি রোগ দেখা দিলে আক্রান্ত কুশি ভেঙে দিতে হবে।
কৃষিতাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনা:
সর্বোচ্চ কুশি আসার আগে বা এসময় কাইচ থোড় আসে। কাইচ থোড় আসার আগে ইউরিয়া সারের শেষ ৩/১ ভাগ তৃতীয় উপরি প্রয়োগ করতে হবে। জমিতে বেশি পানি থাকলে পানি কমিয়ে সার দিতে হবে। আগাছা পরিষ্কার রাখতে হবে। এসময় কিছু আগাছা থাকলেও ধানের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পারে না। যে সমস্ত শ্যামা আগাছায় ফুল দেখা যায় তাদের পরিষ্কার করতে হবে ।
এনএইচ/এমআইএইচএস/জিকেএস