পুকুরে মাছের খাবি খাওয়া দূর করার উপায়
অনেক মাছ চাষির পুকুরে সকাল-বিকেল মাছ ভাসে বা খাবি খায়। মাঝে মধ্যে দুয়েকটা মাছ মরে ভেসে ওঠে। অভিজ্ঞ মাছ চাষিরা এ বিষয়ে জানলেও নতুন চাষিরা এ বিষয়ে তেমন একটা জানেন না। তাই পুকুরে মাছ খাবি খেলে করণীয় সে সম্পর্কে জেনে নিন।
পুকুরে মাছ ভাসার সবচেয়ে বড় কারণ হলো অক্সিজেন স্বল্পতা । মাছ অক্সিজেন গ্রহণ করে পানির ভেতর থেকে। আবার পুকুরের অন্যান্য অণুজীব ছাড়াও ফাইটোপ্লাঙ্কটন, জু-প্লাঙ্কটন অক্সিজেন গ্রহণ করে থাকে। এসবের পরিমাণ বেড়ে গেলে পুকুরে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়।
মাছ পানির উপর স্তরে এসে খাবি খায় তখন সহজেই বুঝা যায় দ্রবিভূত অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেছে । এসময় এ্যারেটর যন্ত্র ব্যবহার করলে এবং হররা টানলে উপকার পাওয়া যায়। বেশি সমস্যা হলে অক্সিজেন পাউডার অথবা অক্সিজেন ট্যাবলেট ব্যবহার করতে হবে।
খাবার বেশি দিলে এবং খাবার হজমে সমস্যা হলে মাছ ভেসে উঠে। আবহাওয়ার পরিস্থিতি বুঝে খাবার দিতে হবে। যতোটা সম্ভব ভাসমান খাবার দিতে হবে। তাই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিতে হবে, জানতে হবে মাছ ভাসার কারণ কি, প্রতিকার কি হতে পারে এবং কি পরিচর্চা নিলে অক্সিজেন ঘাটতি হবে না।
মাছের ঘনত্ব কমাতে হবে। পরিমিত জায়গার চাইতে বেশি পরিমাণ মাছ পুকুরে রাখলে মাছের অক্সিজেন ঘাটতি হয় এবং মাছ ভেসে ওঠে। সেই সঙ্গে মাছ মারা যায়। প্রয়োজনে বাজারজাত করার উপযোগী মাছ পুকুর থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।
মাছের খাবার হিসেবে ডুবন্ত খাবার ব্যবহার না করাই ভালো। ভাসমান খাবার ব্যবহার করলে মাছ কতটুকু খায় সে বিষয়ে জানা যায়। এক্ষেত্রে ভাসমান খাবার দিতে হবে। ফলে অতিরিক্ত খাবার পুকুরের তলায় পঁচে কোনো সমস্যা হওয়ার ভয় থাকে না।
বাড়িতে বা পুকুরের স্টোররুমে অক্সিজেন ট্যাবলেট বা পাউডার রাখা দরকার। মাছ ভাসলে কিংবা অক্সিজেনের পরিমাণ খুবই কম মনে হলে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে। পানিতে ঢেউয়ের সৃষ্টি বা বাঁশ পিটিয়ে অক্সিজেনের সংযোগ ঘটাতে হবে। পুকুরে হররা টানতে হবে।
পুকুরে প্রাকৃতিক খাবার উৎপাদনের জন্য প্রতি শতক পুকুরের জন্য ইউরিয়া ১০০-১৫০ গ্রাম, টিএসপি ৫০-৭৫ গ্রাম এবং গোবর ২-৫ কেজি ১৫ দিন পর পর দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন কোনোভাবেই পুকুরের পানি খুব বেশি সবুজ বা গাড় সবুজ হয়ে না যায়। তাতে মাছের অক্সিজেনের অভাব হয়ে মাছ মারা যেতে পারে। মাছ সকালে ভাসলে চুন দিয়ে দিতে হবে। যদি দুপুরে ভাসে তাহলে লবণ দিয়ে দিতে হবে। শতক প্রতি ২০০ গ্রাম কিংবা পরিমাণ অনুযায়ী। তাহলে মাছ খাবি খাওয়ার সমস্যা দূর হবে।
এমএমএফ/জেআইএম