ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

করলার ক্ষতিকর পোকা দমন পদ্ধতি জেনে নিন

জাগো নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৩:১৬ পিএম, ১৩ এপ্রিল ২০২২

আমাদের দেশে করলা একটি জনপ্রিয় সবজি। এই সবজি এখন সারা বছরই চাষ করা হয়। করলা চাষ করতে গেলে বেশ কিছু রোগ-বালাইয়ের সমস্যায় পড়তে হয়। যেমন,- মাছি পোকা ও পামকিন বিটল পোকা করলার চাষিদের ক্ষতি করে। এসব পোকা করলা ছিদ্র করে। এতে করলা খাওয়ার অনুপযোগী হয় এবং পচে যায়। ফলে লোকসান গুনতে হয় চাষিদের।

মাছি পোকা করলার অন্যতম শত্রু। এতে আক্রান্ত হওয়া হলে স্ত্রী মাছি কচি ফলের নিচের দিকে ওভিপজিটর ঢুকিয়ে ডিম পাড়ে। ডিম পাড়ার স্থান থেকে পানির মতো তরল পদার্থ বেড়িয়ে আসে যা শুকিয়ে বাদামি রং ধারণ করে। ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে ফলের শাস খেতে শুরু করে এবং ফল হলুদ হয়ে পচে ঝরে যায়।

মাছি পোকায় আক্রান্ত হলে করলা বা ফুল সংগ্রহ করে ধ্বংস বা পুড়ে ফেলতে হবে। উত্তমরূপে জমি চাষ দিয়ে পোকার পুত্তলি পাখিদের খাবার সুযোগ করে দিতে হবে। ক্ষেতের মাঝে মাঝে কাঁঠালের (কাঁঠালের মৌসুমে) মোথা দেয়া, এতে করলার পরিবর্তে স্ত্রী মাছি কাঁঠালের মোথায় ডিম পাড়বে এবং ক্ষতির পরিমাণ কমে আসবে। প্রথম ফুল আসা মাত্র ফেরোমন ফাঁদ স্থাপন করতে হবে। প্রতি ১০ শতাংশের জন্য ৩টি করে এই ফাঁদ স্থাপন করতে হবে।

আম বা খেজুরের রসের মৌসুমে এতে সামান্য বিষ মিশিয়ে তা বোতলে রেখে বোতলের গায়ে জানালার মতো কেটে দিয়ে ক্ষেতের মাঝে মাঝে স্থাপন করতে হবে। এতে পোকা ঢুকলে মারা যাবে। এছাড়া পাকা মিষ্টি কুমড়া বা কুমড়া জাতীয় সবজি ১০০ গ্রাম কুচি কুচি করে কেটে তাতে সামান্য বিষ (যেমন,- সপসিন ০.২৫ গ্রাম) মিশিয়ে তা দিয়ে বিষটোপ তৈরি করে মাটির পাত্রে করে ক্ষেতের মাঝে মাঝে স্থাপন করতে হবে। সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক ১ মি.লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাওয়া বা বিক্রি করা যাবে না।

jagonews24

সাদা মাছি পোকাও করলাকে আক্রণ করে। সাদা স্ত্রী মাছি কচি ফলে ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে কীড়াগুলো ফলের শাস খায়, ফল পচে যায় এবং অকালে ঝরে পড়ে। সাদা মাছিতে আক্রমণ করলে দ্রুত দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ, আক্রান্ত অংশ সংগ্রহ করে ধ্বংস করতে হবে। সেক্স ফেরোমন ও বিষটোপ ফাঁদের যৌথ ব্যবহার করতে হবে। বিষটোপের জন্য থেতলানো ১০০ গ্রাম পাকা মিষ্টি কুমড়ার সাথে ০.২৫ গ্রাম সেভিন ৮৫ পাউডার মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে। বিষটোপ ৩-৪ দিন পরপর পরিবর্তন করতে হবে।

পামকিন বিটল পোকাও করলার ভীষণ ক্ষতি করে। এই পোকা চারা গাছের পাতা ফুটো করে খায়। গাছের শিকড়ের ক্ষতি করে এবং বড় গাছ মেরে ফেলতে পারে। এই পোকা দমন করার উপায় জেনে নিন।
আক্রান্ত গাছ থেকে পূর্ণাঙ্গ পোকা হাতে ধরে মেরে ফেলতে হবে।

চারা অবস্থায় ২০-২৫ দিন চারা মশারির জাল দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম সেভিন বা কার্বারিন-৮৫ মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। কীড়া দমনের জন্য প্রতিটি গাছের গোড়ায় ২-৫ গ্রাম বাসুডিনবা ডায়াজিনন ১০ জি মিশিয়ে সেচ দিতে হবে। স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাওয়া বা বিক্রি করা যাবে না।

করলার ভাইরাসজনিত মোজাইক রোগও বেশ ক্ষতিকর। এ রোগে আক্রান্ত হলে গাছে হলুদ ও গাঢ় সবুজ ছোপ ছোপ মোজাইক করা পাতা দেখা দেয়।

এ ভাইরাসে আক্রান্তের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে রোগমুক্ত বীজ বপন করতে হবে। ক্ষেতে সুষম সার ব্যবহার এবং ক্ষেত থেকে আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলতে হবে। জাব পোকা ও সাদা মাছি এ রোগের বাহক, তাই এদের দমনের জন্য ইমিডাক্লোরোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক। যেমন,- এডমায়ার ১ মি.লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাওয়া বা বিক্রি করা যাবে না।

তথ্যসূত্র: কৃষি বাতায়ন

এমএমএফ/জিকেএস

আরও পড়ুন