প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে বসে থাকলে চলবে না: কৃষিমন্ত্রী
প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে বসে না থেকে তা দ্রুত মাঠে ছড়িয়ে দিয়ে কৃষকের কাছে জনপ্রিয় করতে বিজ্ঞানী, গবেষক, সম্প্রসারণকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) ঢাকায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে বিএআরসির অধীন এনএটিপি প্রকল্পের আওতায় উদ্ভাবিত প্রযুক্তি সমূহের যাচাই কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তাগিদ দেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি ধানসহ বিভিন্ন ফসলের অনেক উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়েছে। যেমন- ব্রি উদ্ভাবিত ৮৯ ও ৯২ বোরো জাতের ধানের উৎপাদন প্রতি শতাংশে প্রায় ১ মণ। বিনা-১১ আমনের স্বল্পজীবনকালের ধান উদ্ভাবন করেছে। ফলে আমন ও বোরো মৌসুমের মাঝের সময়ে সরিষা আবাদ সম্ভব হচ্ছে, এটি একটি অতিরিক্ত ফসল ও নতুন শস্যবিন্যাস। লবণাক্তসহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবন হয়েছে। উপকূলে প্রায় দুই মিলিয়ন হেক্টর লবণাক্ত জমি রয়েছে। সেখানে লবণাক্তসহিষ্ণু ধানের চাষ করে বছরে দু’টি ফসল করা সম্ভব।
ক্রাশ প্রোগ্রাম বা সময়াবদ্ধ সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে এসব জাত ও প্রযুক্তিকে মাঠে ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আগামী বোরো, আউশ, আমন মৌসুমে দেশের কোথায়, কতটুকু জমিতে আবাদ করতে চাই, দ্রুত তা সুনির্দিষ্ট করতে হবে। আমরা এবার বোরোতে ব্রি-ধান ৮৯ ও ৯২ এবং আমনে বিনা-১১ দেশের কৃষকেরা যা উৎপাদন করবে সবটুকু বীজ হিসেবে কিনে নেবো, যাতে বীজ সংকট না হয়। বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে, প্রয়োজনে নতুন জাত ও শস্যবিন্যাস গ্রহণকারী চাষিদেরকে বিনামূল্যে বীজ দেওয়া হবে, সারের দাম আরও কমিয়ে দেওয়া হবে। যেভাবে সম্ভব আপনারা প্রযুক্তিকে কৃষকের কাছে নিয়ে যান ও কৃষকদেরকে উৎসাহিত করুন।
ধান উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, এ বছর দেশে চালের রেকর্ড উৎপাদন হয়েছে। বর্তমানে চালের সরকারি মজুতও সর্বকালের সর্বোচ্চ। তারপরও চালের দাম বাড়ছে, বিশেষ করে সরু চালের দাম। খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা হুমকির সম্মুখীন। অন্যদিকে, দেশে ১০ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। প্রতিবছর ২২-২৪ লাখ নতুন মুখ যোগ হচ্ছে। অ্যানিমেল ফিড হিসেবেও চালের কিছু ব্যবহার হচ্ছে। মানুষের আয় ও জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। এসব মিলে চালের চাহিদা ও কনজাম্পশন দিনদিন বাড়ছে। এ অবস্থায়, খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে টেকসই করতে হলে নতুন উদ্ভাবিত ধানের উন্নত জাত ও প্রযুক্তিকে মাঠে ছড়িয়ে দিয়ে আরও বেশি ধান-চাল উৎপাদন করতে হবে।
কর্মশালায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার, বিএআরসির চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার প্রমুখ বক্তব্য দেন। বিএআরসির অধীন এনএটিপি প্রকল্পের আওতায় ৪১টি প্রযুক্তি নির্বাচন করা হয়।
এনএইচ/এমআরআর/এএসএম