অসময়ে শিলাবৃষ্টিতে লণ্ডভণ্ড কৃষকের স্বপ্ন
অসময়ে শিলাবৃষ্টিতে সব হারিয়ে সর্বসান্ত্ব চাঁপাইনবাবগঞ্জের অনেক কৃষক। শীতকালীন সবজিসহ প্রায় সব ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শিবগঞ্জ উপজেলার চরপাঁকা ইউনিয়নে। ফসলের ক্ষতিতে এখন দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন কৃষকেরা।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) জেলার রামচন্দ্রপুর এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, টমেটো, পেঁয়াজ, আলু গাছ, সরিষা, আম গাছ ও বরইসহ কৃষকের বিভিন্ন ফসল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছে। বাঁধাকপির গাছগুলো টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। সরিষার গাছ আছে ফল নেই, ঝরে পড়ে আছে মাটিতে। আম গাছের পাতা ঝরে আশেপাশে বিছিয়ে রয়েছে।
এর আগে বুধবার (১২ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রানিহাটি, রামচন্দ্রপুর, ছত্রাজিতপুর, মহারাজপুর, বারঘরিয়া, রামজীবনপুর, বাবুপুর, চর পাঁকা ও নয়ালাভাঙ্গাসহ বিভিন্ন স্থানে ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টি হয়।
রামচন্দ্রপুর এলাকার মফিজুল নামে এক কৃষক জাগো নিউজকে জানান, গত আড়াই মাস আগে লাভের আশায় ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে তিন বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেন তিনি। ভালোই ফুল-ফল হয়েছিল। লাভের আশা ছিল তার। কিন্তু হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে সব স্বপ্ন ভেঙে গেছে। শিলাবৃষ্টিতে গাছ থেকে সব ফল ঝরে গেছে। এখন ন্যাড়া গাছগুলোই শুধু দাঁড়িয়ে আছে।
রানিহাটি এলাকার আবদুস সালাম জানান, এ বছর শীতে বেশকিছু সবজি চাষ করেন তিনি। সপ্তাহ দুই আগে বাজারে বেশ কিছু সবজি বিক্রিও করেন। কিন্তু অকাল বৃষ্টি সব লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। বিভিন্ন সবজি গাছের ফুল-ফল ঝরে গেছে।
চরপাঁকা ইউনিয়নের কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, তার পেঁয়াজ, রসুন, সরিষা, ফুলকপি, বেগুন ও আলুসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি ছিল। শিলাবৃষ্টিতে সব নষ্ট হয়ে গেছে। বিশেষ করে পেঁয়াজের অনেক গাছ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আর সরিষার শুধু গাছ দাঁড়িয়ে আছে, ফল নেই। তিনি খুব দুশ্চিন্তাগ্রস্ত।
চরপাঁকা ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রনেতা এস এম আল আমিন জুয়েল জানান, শিলাবৃষ্টিতে তার পেঁয়াজসহ এলাকার বিভিন্ন কৃষকের ফসলেন ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষকেরা ফসল হারিয়ে দিশেহারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, শিলা বৃষ্টিতে সরিষা, কলা, বেগুন, টমেটোসহ জেলার ৮১২ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। তার মধ্যে বেশি ক্ষতি হয়েছে সরিষার। তবে মোট ক্ষতি পরিমাণ এখনই বলা যাচ্ছে না। আবহাওয়া দ্রুত স্বাভাবিক হলে ক্ষতির পরিমাণ কিছু কমে আসবে।
সোহান মাহমুদ/এমকেআর