ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

ফাইটোস্যানিটারিতে সহায়তা করবে ইউকে ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:৪৩ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২১

ইউরোপের বাজারে কৃষিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য দেশে আধুনিক টেস্টিং ল্যাব স্থাপনসহ কৃষিপণ্য রোগ-জীবাণুমুক্ত ও নিরাপদ করতে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য সনদ (ফাইটোস্যানিটারি) দিতে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাজ্যের (ইউকে) ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হবে।

সোমবার (১৫ নভেম্বর) লন্ডনে দেশটির ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি (এফএসএ) ও সরকারি গবেষণাগারের কর্মকর্তা এবং লন্ডন সফররত কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সির চিফ সাইন্টিফিক অ্যাডভাইজার অধ্যাপক রবিন মে, ডেপুটি গভর্নমেন্ট কেমিস্ট সেলভারানি এলাহি, হেড অব ইইউ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি লিজ স্ট্রেটন, এফএসএর সাইন্টিফিক স্যাম্পলিং ও ল্যাবরেটরি পলিসি লিডার ডেভিড ফ্রাঙ্কলিং উপস্থিত ছিলেন। ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি ও সরকারি গবেষণাগারের এক্সপার্টরা এসময় সেদেশের ল্যাব স্থাপন, পরিচালনা, টেস্টিং মানদণ্ড, রেগুলেটরি চাহিদা প্রভৃতি বিষয়ে উপস্থাপনা করেন।

এসময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আমরা বিশ্বমানের আধুনিক ল্যাব স্থাপন ও গ্রহণযোগ্য সার্টিফিকেশন দেওয়ার জন্য কাজ করছি। এক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের যে সক্ষমতা রয়েছে, তা আমরা কাজে লাগাতে চাই। আমরা যুক্তরাজ্যের কারিগরি সহযোগিতা কামনা করি। আমাদের নিজস্ব অর্থেই এসব কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

এসময় যুক্তরাজ্য প্রতিনিধিদল ল্যাব সিস্টেম উন্নয়নে ইউনিডো থেকে অনুদান পাওয়া যেতে পারে বলে জানান। এছাড়া যুক্তরাজ্য এআইডির চলমান ফান্ডিং সহায়তায় এ বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না, সেটিও তারা খতিয়ে দেখবেন বলে জানান। এছাড়া, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যর মধ্যে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এগ্রিমেন্টের বিষয়ে যে আলোচনা হচ্ছে- তার মধ্যে ল্যাব ও ফাইটোস্যানিটারি বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম জানান।

Agri_min-2.jpg

সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে পান রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও যুক্তরাজ্যে তা এখনো বহাল রয়েছে। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য প্রতিনিধিদল জানায়, ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডের পার্লামেন্টে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে বিল পাস বিবেচনাধীন আছে। উত্তর আয়ারল্যান্ডে পান রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা নেই।

প্রবাসী ব্যবসায়ীদের দেশের কৃষিখাতে বিনিয়োগের আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর:

একইদিন লন্ডনের স্থানীয় সময় বিকেলে বাংলাদেশ দূতাবাসে ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিবিসিসিআই) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন কৃষিমন্ত্রী।

এসময় যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ব্যবসায়ীদের দেশের কৃষিখাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষিপণ্যের বাণিজ্যিক উৎপাদন, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। সে সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে প্রবাসী ব্যবসায়ীদেরকে বিনিয়োগ করতে হবে। দেশে বিনিয়োগের সব সুবিধা রয়েছে।

এসময় ব্যবসায়ী নেতারা বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য রপ্তানির জন্য কার্গো বিমান ভাড়া বেশি, স্ক্যানিং সমস্যা, কার্গো ভিলেজে কোল্ড স্টোরেজের সমস্যাসহ নানা সমস্যা তুলে ধরেন। এছাড়া, গ্লোবাল গ্যাপ (উত্তম কৃষি চর্চা) মেনে ফসল উৎপাদন, সংরক্ষণ ও সার্টিফিকেট দেওয়ার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তারা কৃষিমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধিদলের এ সফরের প্রশংসা করেন।

কৃষিপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধাগুলো নিরসনে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ ব্যবসায়ীদেরকে অবহিত করেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, রপ্তানি বৃদ্ধিতে আধুনিক কৃষিচর্চা মেনে ফসল উৎপাদন, রপ্তানি উপযোগী জাতের ব্যবহার, আধুনিক প্যাকিং হাউজ নির্মাণ, অ্যাক্রিডিটেড ল্যাব স্থাপনসহ নানা কাজ চলমান আছে। ইতোমধ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষিপণ্যের রপ্তানি ২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে দুইটি খসড়া রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মতবিনিময় সভায় লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ, বিবিসিসিআইর হেড অব অ্যাডভাইজরি বোর্ড শাহগীর বখত ফারুক, প্রেসিডেন্ট বশির আহমেদ, ডিরেক্টর রফিক হায়দার, পাথফাইন্ডারের সিইও ইফতি ইসলাম, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভাইস প্রেসিডেন্ট শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সফররত বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এনএইচ/এমআরআর/এমএস