ভোলায় নতুন জাতের আউশ ধান চাষ করে সফল কৃষকরা
ভোলায় র্দীঘদিন ধরে আউশ ধনের চাষ করে তেমন সফলতা না পেলেও এবার সফলতার মুখ দেখছেন কৃষকরা। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগীতায় ব্রি হাইব্রিড ৭ জাতের আউশ ধান করে সফল ভোলার কৃষকরা।
কৃষকরা বলছেন নতুন এ জাতের আউশ ধানের চাষে কম সময় লাগে। অন্যদিকে ক্ষেতে তেমন একটা রোগ, পোকামাকড়ের আক্রমণ নেই। আর খুব কম খরচে অধিক ফসল ঘরে তুলতে পারছেন তারা।
ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ভোলার সাত উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৪ লাখ কৃষক রয়েছে। প্রতি বছরই তারা বিভিন্ন ধরনের ধান চাষ করে আসছেন। এ বছর বর্ষার মৌসুমে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগীতায় ও ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের বাস্তবায়নে জেলার ৬ উপজেলায় প্রায় ২০০ কৃষক ১৯৮ হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ব্রি হাইব্রিড ৭ জাতের আউশ ধানের চাষ করে। আর হেক্টর প্রতি ৭ টন ধান পাচ্ছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নতুন জাতের এ ধান কৃষকদের সফলের মাঠে পেকে যাওয়ায় হাসি ফুটে উঠেছে কৃষকদের মুখে। আবার কোন কোন কৃষক আনন্দের সাথে পেকে যাওয়া ধান কাটার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটছেন। আবার কেউ কেউ সনাতন পদ্ধতিতে কাঁচি দিয়ে ধান কাটছেন।
ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও রাজাপুর ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের কৃষক মো. ইয়ানুর রহমান বিপ্লব মোল্লা জানান, প্রথমবারের মতো ব্রি হাইব্রিড ৭ জাতের আউশ ধান চাষ করেছি। ক্ষেতে ব্যাপক ফসল হয়েছে।
তিনি আরো জানান, মাত্র ১১০ দিনের মধ্যে ধান কাটার উপযোগী হওয়ায় আমরা ধান কাটা শুরু করে দিয়েছি। হেক্টর প্রতি ৭ টন করে ধান পাচ্ছি। এতে আমরা ব্যাপক লাভবান হবো।
কৃষক মো. ইব্রাহীম ও মো. শফিক জানান, সাধারণ আউশ ধান করতে আমাদের ক্ষেতে ব্যাপক সার, কীটনাশক, পরিশ্রম ও অনেক টাকা ব্যয় করতে হয়। সে তুলনায় তেমন ফসল ঘরে তুলতে পারা যায় না। কিন্তু ব্রি হাইব্রিড ৭ জাতের আউশ ধানের ক্ষেতে খুবই কম পরিমাণ সার, কীটনাশক ব্যবহার হয়। এতে তেমন পরিশ্রম হয় না। এছাড়াও অনেক কম খরচে অধিক ফসল পাওয়া যায়।
রাজাপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক মো. ইলিয়াস হোসেন জানান, আমাদের এ ইউনিয়নের কৃষকরা ব্রি হাইব্রিড ৭ জাতের আউশ ধানের চাষ করেছে। আমরা কয়েকজন কৃষক ওই ধানের ক্ষেতে গিয়ে দেখেছি ক্ষেতে অনেক ফসল হয়েছে। ধান কেটে হেক্টর প্রতি ১৭৫ মণ অর্থাৎ, ৭ হাজার কেজি ধান পাচ্ছেন। এ ধান যারা চাষ করেছেন তারাই বেশ লাভবান হচ্ছেন।
তিনি আরো জানান, আগামী বছর আমরা রাজাপুর এলাকার অনেক কৃষক ব্যাপক জমিতে এ জাতের ধান চাষ করবো।
ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবু মো. এনায়েত উল্লাহ জানান, আমরা ভোলার কৃষকদের বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগীতায় ব্রি হাইব্রিড ৭ জাতের আউশ ধানের ব্রিজ বিনামূল্যে দিয়েছে পরীক্ষামূলক চাষ করার জন্য। আর পরীক্ষামূলকই আমরা সফল হয়েছি। কৃষকরা হেক্টর প্রতি ৭ টন করে ধান পাচ্ছেন।
তিনি আরো জানান, আমরা আশা করছি আগামী বছর কৃষকরা ব্যাপক পরিসরে এ জাতের ধান চাষ করছে আগ্রহী হবেন। আর কৃষক সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে।
জুয়েল সাহা বিকাশ/এমএমএফ/জিকেএস