বনজুঁইয়ের চোখজুড়ানো সৌন্দর্য
আজাহার ইসলাম
নিজের সৌন্দর্য মেলে ধরেছে বনজুঁই। বসন্ত ঋতুতে পথে প্রান্তরে থোকায় থোকায় ফুটে এসব ফুল। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবীড় এই পল্লিতেও পথে প্রান্তরে আপন সৌন্দর্য মেলে ধরেছে সবুজ বহুপত্রী এই ফুল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক এলাকা, হল, বিভিন্ন ভবন, মফিজ লেকসহ বিভিন্ন জায়গায় ফুটেছে নজরকাড়া এই ফুল।
গ্রামাঞ্চলে মাঠে-ঘাটে, পথে প্রান্তরে প্রায়শই দেখা যায় নাম না জানা নানা প্রজাতির বনফুল। অনেক কবি প্রেমে পড়েছিলেন নানা প্রজাতির বনফুলের। যার মধ্যে ফুল প্রেমীদের মনে সাড়া জাগনিয়া অন্যতম একটি ফুল হলো বনজুঁই।
নামটি শুনলে অনেকের কাছেই অপরিচিত মনে হবে। অযত্নে অবহেলায় বেড়ে উঠা এই বনফুলটি ভাটফুল, ভাটিফুল, ঘেঁটুফুল বা ঘন্টাকর্ণ নামেই অধিক পরিচিত।
বনজুঁইয়ের বৈজ্ঞানিক নাম ক্লেরোডেন-ড্রাম-ইনারমি। ইনফরচুনাটাম প্রজাতির ফুল এটি। প্রায় ৪০০ প্রজাতির বনজুঁই পাওয়া যায়। যাদের আদিনিবাস এশিয়া মহাদেশের বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায়।
এই ফুলের মনমানাতো সৌন্দর্যে মুগ্ধ হবে যে কেউ। এ মিষ্টি গন্ধ মাতাল করে তোলে ফুলপ্রেমিদের মন। এছাড়া এর মনোমুগ্ধকর সৌরভে প্রজাপতি, মৌমাছি, পিঁপড়াসহ নানা প্রতাজির কীট প্রতঙ্গের আনাগোনা চোখে পড়ার মত। এরা ফুলের সুগন্ধ, সৌরভে ব্যাকুল হওয়া ছাড়াও ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে আসে।
ছোট আকৃতির এই ফুলটির পুংকেশর,পাপড়ি, পাতা ও কাণ্ড নিঁখুত কারুকার্জে সাজানো। মাঝের পুংকেশর ফুলটির সৌন্দর্য যেন আরো বাড়িয়ে তুলেছে। ফুলের পাপড়ি ঝরে পড়ার পর লালচে বৃতির মাঝখানে সবুজ ও বেগুনি বীজ দেখতে একেবারে নাকফুলের মত। মনে হয় যেন কারুকাজ খচিত লালচে পাথরের মাঝে সবুজ অথবা গাঢ় বেগুনি চকচকে এক ডায়মন্ড খণ্ড বসিয়ে রেখেছে।
বনজুঁই সৌন্দর্য বর্ধন ছাড়াও নানাগুণে গুণান্বিত। ভেষজ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে এই উদ্ভিদটির পাতা, শিকর ও ফুল। ম্যালেরিয়া, চর্মরোগ ও পোকা-মাকড়ের কামড়ে খুবই উপকারি। এই উদ্ভিদের কচি পাতার রস টনিক হিসেবে কাজ করে।
পাতায় প্রাপ্ত ক্যামিকেল কৃমিনাশক, জ্বর উপশমকারি ও এক্সপেকটোরেন্ট হিসেবেও কাজ করে। মূল থেকে প্রাপ্ত ক্যামিকেল এজমা, টিউমার ও চর্মরোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ইমপোটেন্সি বা যৌনদুর্বলতায় মূলের উঞ্চ রস চমকপ্রদ ফলপ্রসু।
লেখক: শিক্ষার্থী, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
এমএমএফ/এমএস