ধানের দাম বেশি থাকায় কৃষকের মুখে হাসি
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধান কাটা চলছে পুরোদমে, ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা। সারা বছরের খোরাক অগ্রহায়ণ মাসের ধান থেকেই রাখা হয়। সকালে কুয়াশা পড়লেও শায়েস্তাগঞ্জে ভালো রোদ থাকায় ধান শুকাতে তেমন বেগ পেতে হয়নি কৃষকদের।
প্রতি একর ধান কাটা হচ্ছে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকায়। আবার অনেকেই জনপ্রতি ৫০০ টাকা পারিশ্রমিকে ধান কাটাচ্ছেন। শ্রমিক সংকট থাকায় অনেকেই পাকা ধান সঠিক সময়ে বাড়ি আনতে পারছেন না। এজন্য অনেকেই আবার বেশি টাকা শ্রমিককে দিয়ে ধান কাটান।
এবার আমন ধানের বেশ ভালো ফলন হয়েছে। পাশাপাশি বাজারে ও ধানের দাম বেশি থাকায় কৃষকদের মুখে তৃপ্তির হাসি।
অগ্রহায়ণ মাসে দম ফেলার সময় নেই বাড়ির কৃষাণিদেরও। দিনভর ধান সিদ্ধ করে একটানা চার-পাঁচ দিন রোদে শুকিয়ে গোলাভরে রাখছেন তারা। ধানের খড়ও শুকিয়ে মোড়া করে রাখছেন গরুর খাবারের জন্য।
শায়েস্তাগঞ্জে আমন ধানের মণ বাজারে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। চিকন ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। কিন্তু শায়েস্তাগঞ্জে এবার বন্য শূকরের উৎপাতে অনেক কৃষকই পরিমাণ মতো ধান ঘরে তুলতে পারেননি।
উপজেলার সুতাং গ্রামের কৃষক লাল মিয়া জানান, তিনি এক একরে ১৫ মণ ধান পেয়েছেন, তুলনামূলক ভালো ফলন হয়েছে।
উপজেলার নুরপুর গ্রামের এলিম মিয়া জানান, বন্য শূকর তার বর্গা চাষ করা আড়াই একর জমির ধান নষ্ট করেছে। ফলে তিনি কাঙ্ক্ষিত ফসল ঘরে তুলতে পারেননি। সুতাং অঞ্চলের বাইরে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে বিধায় তাদের মুখে হাসি।
উপজেলার উবাহাটা গ্রামের কৃষক মহিবুর রহমান মোরাদ বলেন, আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে এবার। বাজারে দাম বেশি আর শ্রমিক সংকট না থাকায় কৃষকরা খুব খুশি। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে একই চিত্র। মনের আনন্দে ধান কেটে ঘরে তুলছেন কৃষকরা।
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুকান্ত ধর বলেন, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলায় আমার ধানের জমি ২ হাজার ৭০০ হেক্টর। এবার ধানের দাম বেশি থাকায় কোনো ফসলি জমিই ফাঁকা নেই।
এ পর্যন্ত উপজেলায় ৩৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। এবার আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৩০০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রা পেরিয়ে ধান উৎপাদন হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, শায়েস্তাগঞ্জে শ্রমিক সংকট যাতে না দেখা দেয় সেজন্য দুটি কম্বাইন্ড মেশিন দেয়া আছে। একটি শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভায় অন্যটি ব্রাহ্মণডুরা ইউনিয়নে। তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে মেশিনের সাহায্যে ধান কাটা যাবে।
কামরুজ্জামান আল রিয়াদ/এমএমএফ/পিআর