প্রতিটি লাউ ৪০ টাকা, লাভবান চাষিরা
লাউ খেতে ঝুলে থাকা লাউয়ের সারি দেখে যেমন আনন্দিত হচ্ছেন চাষিরা। তেমনি আগাম লাউ বিক্রি করে অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেকেই। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরও ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা। সবকিছু ঠিক থাকলে এবার লাউ চাষে লাভবান হবেন বলে আশাবাদী তারা।
কুড়িগ্রাম কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী চলতি শীতকালীন মৌসুমে জেলার ৯টি উপজেলার ৪ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে শাক-সবজি চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ৯শ ৫০ হেক্টর জমির শাক-সবজি। এরমধ্যে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ৬৫ হেক্টর জমিতে এখন পর্যন্ত লাউ চাষ করা হয়েছে।
কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের ১নং শিবরাম আলুটারী গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম বলেন, আমি ৮ হাজার টাকা ব্যায়ে ১৫ শতক জমিতে বাদশা জাতের লাউয়ের বীজ বপন করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। প্রতিটি লাউ গড়ে ৩৫-৪০ টাকা দরে বিক্রি করেছি।
মোট ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে লাভবান হয়েছি। আমার অন্যান্য জমিতেও লাউ গাছ লাগিয়েছি। আশা রাখি সেগুলোতে লাভবান হবো।
একই একই গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম জানান, আমি ২০ শতক জমিতে ময়না জাতের লাউয়ের চাষ করেছি। প্রতিটি লাউ ৪০ টাকা দরে বিক্রি করতেছি। লাউয়ের ফলনও ভালো হয়েছে। বর্তমান বাজার দর অব্যাহত থাকলে অনেক লাভবান হবো।
ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের নওয়াবস গ্রামের কৃষক আমানুল হক জানান, জমিতে পরিবারের সবাই মিলে শ্রম দিয়েছি। নিজের গৃহপালিত গরুর গোবর থেকে সারের যোগান দেয়ায় মাত্র ৩ হাজার ২শ টাকা ব্যয়ে ৪০ শতক জমিতে লাল তীর ইস্পাহানি ও এসিআই জাতের লাউ চাষ করেছি। লাউ প্রতি পিচ বিক্রি করতেছি ৪০ টাকা দরে।
এখন পর্যন্ত ১৬-১৭ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি। আশা রাখি বাজার দর ভালো থাকলে ৮০-৯০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করতে পারবো।
আমি চাই আমার চাষ দেখে এলাকার অন্যান্য কৃষকরা লাউ চাষে উদ্বুদ্ধ হোক। লাউ চাষে খরচ কম। লাউ চাষে কৃষকরা এগিয়ে আসলে বাজারে চলমান সবজির ঘাটতি যেমন পূরণ হবে তেমনি তারা লাভবান হবেন। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম জাগোনিউজ২৪.কমকে বলেন, লাউয়ের চাষ দোআঁশ মাটিতে ভালো হয়।
নিয়ম অনুয়ায়ী পরিচর্যাসহ দোআঁশ মাটিতে লাউ চাষ করলে ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা থাকে। শাক হিসেবে চাষ করতে চাইলে প্রতি শতক জমিতে লাউ শাক বিক্রি করে প্রায় ৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
মো. মাসুদ রানা/এমএমএফ/এমকেএইচ