খুলনায় বৃষ্টিপাত কম, আমনের চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক
খুলনা জেলার ৯টি উপজেলায় আমন চাষ রোপণের এখনও সময় আছে। এ বছর জেলায় ৯ লাখ ২৫ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে কৃষি দফতরের অভয়বাণীতে দুশ্চিন্তা কাটছে না চাষীদের। অন্য বছর এ সময় অধিকাংশ জমিতে চাষের কাজ শুরু হয়ে গেলেও এ বছর ডুমুরিয়া, ফুলতলা, বটিয়াঘাটা, দাকোপ, তেরখাদা, রূপসা দিঘুলিয়া, পাইকগাছা, কয়রাসহ অধিকাংশ জমি শুকনো পড়ে রয়েছে।
এই সময় খুলনায় অনাবৃষ্টি। প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এরই মধ্যে দক্ষিণ অঞ্চলের অনেক জমিতে আমন ধানের চাষ শুরু হলেও বৃষ্টির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে জমি। বাধ্য হয়ে অনেকে শ্যালো, মিনি-পাম্প থেকে পানি দিয়ে ধান বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করছেন। কিন্তু এভাবে চাষের শুরু থেকেই শ্যালো বা মিনি-পাম্পের পানি দিয়ে বর্ষার ধান বাঁচানো সম্ভব নয় বলে মনে করছেন কৃষকরা।
গত ৩১ জুলাই পর্যন্ত পাওয়া হিসেব খুলনায় অনুযায়ী বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অন্য বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ কম হয়েছে। ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, ডুমুরিয়া উপজেলায় আমন ধানের আবাদ হচ্ছে, ১৫ হাজার ৫ শত ২৫ হেক্টর জমিতে, বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা কম, তবে এখনই অনাবৃষ্টি বলা যাবে না। আমাদের ডুমুরিয়া উপজেলায় আমন রোপণের এখনও সময় আছে।
খুলনা জেলার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) মো. নজরুল ইসলাম জানান, এ বছর জেলায় এখনও পর্যন্ত ৬০৫৬ হেক্টর জমিতে ধানের চারা রোপণ হয়েছে। তবে বৃষ্টির সময় এখনও শেষ হয়ে যায়নি, বৃষ্টি হবে কৃষি দফতরের এমন অভয়বাণীতে দুশ্চিন্তা কাটছে না চাষীদের। অন্য বছর এ সময় অধিকাংশ জমিতে চাষের কাজ শুরু হয়ে গেলেও এ বছর খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলাসহ বেশকিছু জায়গায় শুকনো জমি হিসেবে পড়ে রয়েছে।
ডুমুরিয়ার টিপনা গ্রামের কৃষক শেখ মঞ্জুর রহমান, সাজ্জাদ হোসেন জোয়ার্দার, আব্দুল গনি গাজী বলেন, দিন পনেরো আগে বৃষ্টি হওয়ার পর চাষের কাজ শুরু করে দিয়েছিলাম। হঠাৎ বৃষ্টি বন্ধ। শ্যালো, মিনি থেকে পানি দিয়ে রোয়া ধান বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। কিন্তু বৃষ্টি না হলে এভাবে কতদিন সম্ভব?
ভরাতিয়া গ্রামের নবদ্বীপ মল্লিক বলেন, আমন ধানের চাষ পুরোপুরি বৃষ্টি নির্ভর। জমি তৈরি, চারাও তৈরি। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে ধান রোপণ করার মতো অবস্থা নেই। জমি শুকনো হয়ে গেছে।
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহম্মেদ বলেন, ‘এখনই দুশ্চিন্তার এত কারণ নেই। কিছু এলাকায় আমন ধান বাঁচানোর জন্য কৃষকরা খালের পানি মাধ্যমে পানি সেচ দিতে পারবেন, ফলে স্বাভাবিক ভাবেই চাষাবাদ হবে’।
আলমগীর হান্নান/এমআরএম