ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

করোনায় কষ্টে কাটছে পাটিশিল্পীদের জীবন

জেলা প্রতিনিধি | ঝালকাঠি | প্রকাশিত: ০৩:৫২ পিএম, ১২ মে ২০২০

করোনাভাইরাসের কারণে চরম দুর্দশায় পড়েছেন শীতলপাটি তৈরির সঙ্গে যুক্ত পাটিকররা। ঝালকাঠির ৩ শতাধিক পাটিকর পরিবারে আগের মতো অবস্থা নেই। বিক্রি নেই বলে বেশিরভাগই আর্থিক অনটনে রয়েছেন। পাটি তৈরি করে রাখলেও লকডাউনের ফলে ভরা মৌসুমে কেউ এখন কিনছে না। তারপরও তারা প্রাণপণ চেষ্টা করছেন পূর্বপুরুষের এ ঐতিহ্যবাহী পেশায় টিকে থাকতে।

জানা যায়, শীতলপাটি ঝালকাঠি জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী পণ্য। একসময় গরমের দিনে মানুষকে অনাবিল শ্রান্তি এনে দিতো শীতলপাটি। মোর্তা, পাটিবেত বা মোস্তাক নামক গুল্মজাতীয় উদ্ভিদের ছাল দিয়ে তৈরি করা হয় এ পাটি। কোথাও কোথাও একে ‘নকশিপাটি’ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়। এ নিপুণ হস্তশিল্প শহর-গ্রামে মাদুর বা চাদরের পরিবর্তে ব্যাপকভাবে সমাদৃত।

এলাকা সূত্রে জানা যায়, এ শীতলপাটি বুনে ৩ শতাধিক পরিবারের জীবিকা নির্বাহ হয়। তাই ঝালকাঠির সচেতন মহলের দাবি, সরকারের উচিত এ শিল্প সংশ্লিষ্টদের প্রণোদনা দেওয়া। পাটি বিক্রির মৌসুমে পাটিকরদের জন্য বিনা সুদে ঋণের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাদের পুনর্বাসনও করা হয় না। তাই সরকারকে এ বিষয়গুলো নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে।

jagonews24

রাজাপুর উপজেলার হাইলাকাঠিসহ কয়েকটি গ্রামে ৩ শতাধিক পরিবার পাটি তৈরি করে। বিক্রির মৌসুম হলেও করোনার প্রভাবে শীতলপাটি বিক্রি করতে পারছেন না পাটিকররা। ফাল্গুন থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত পাটির চাহিদা বেশি। অথচ করোনার ভয়ে খুচরা ও পাইকাররা আসতে পারছেন না পাটি কিনতে। বাজারের এ অবস্থার কারণে পাটিকর পরিবারগুলো কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। তাদের প্রশ্ন, কিভাবে সংসার চালাবে তারা?

এ প্রসঙ্গে তপন ও বিজয় পাটিকর বলেন, ‘সরকারি সহযোগিতায় অল্প সুদে ঋণ পেলে ভালো হতো। এ ছাড়া সরকার বাজারজাত করার উদ্যোগ নিলে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী শীতলপাটির বাজার আবার ফিরে পাওয়া যাবে।’

মঠবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল সিকদার বলেন, ‘শীতলপাটির চাহিদা না থাকায় পাটিকররা এমনিতেই মানবেতর জীবনযাপন করছে। করোনার কারণে তারা আরও ক্ষতির মধ্যে পড়বে। যতদূর সম্ভব তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।’

jagonews24

জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, ‘পাটি বিপণন ত্রুটি থাকায় বছরের একটি সময় তাদের বসে থাকতে হচ্ছে। আমরা সরকারের অতিদরিদ্র্য কর্মসৃজন কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র পাটিশিল্পীদের কাজের আওতায় আনার চেষ্টা করছি। হয়তো এটি অচিরেই সম্ভব হবে।’

করোনার কারণে পাটিকরদের পাটি বিক্রি বন্ধ থাকায় তাদের সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।

মো. আতিকুর রহমান/এসইউ/এমকেএইচ

আরও পড়ুন