প্রতি পিস লাউ ৭০ টাকা, ফারুকের মুখে হাসি
বছরের ৬ মাস ৪৮ শতাংশ জমিতে লাভজনক সবজি লাউ চাষ করতে খরচ হয় ২০ হাজার টাকা। সেই লাউ বিক্রি করা হচ্ছে দেড় থেকে ২ লাখ টাকা। লাউ বিক্রি করে সংসার পরিচালনা ও সন্তানদের লেখাপড়া চলছে। সব মিলিয়ে লাউ বিক্রি করে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। বলছি ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের কানাই নগর গ্রামের মো. ফারুকের কথা। তার দেখাদেখি গ্রামের অনেক কৃষক লাউ চাষ শুরু করেছেন। ফলে বাড়ছে লাউ চাষির সংখ্যা।
সরেজমিনে জানা যায়, সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব কানাই নগর গ্রামের কৃষক মো. ফারুক (৪০)। তিনি গত ৫ বছর আগে ১৮ শতাংশ জমিতে বছরের আশ্বিন মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত লাউ চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরই সফলতা পেয়েছেন। পরের বছর থেকে বড় পরিসরে লাউ চাষ শুরু করেন। বর্তমানে ৪৮ শতাংশ জমিতে লাউ চাষ করছেন। এতে বছরের ৬ মাসে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। বছরে সেই লাউ বিক্রি হচ্ছে দেড় থেকে ২ লাখ টাকা। বাকি ৬ মাস ধান চাষ করেন।
মো. ফারুক জানান, লাউ বিক্রির টাকা দিয়ে ৩ সন্তানের লেখাপড়ার খরচসহ সংসার ভালোভাবে পরিচালনা করছেন। কয়েকটি গরু কিনেছেন। কয়েক শতাংশ জমিও কিনেছেন। এ সবজি চাষ করে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন।
ফারুকের ছোট ছেলে আলম জানায়, সে এ বছর দশম শ্রেণিতে পড়ছে। পড়াশোনার পাশাপাশি লাউ ক্ষেতে পরিচর্যাসহ নানা কাজ করছে। ফলে কোনো শ্রমিকের প্রয়োজন হয় না। এতে তার বাবার টাকা বেঁচে যায়।
স্থানীয় কৃষক মো. আলাউদ্দিন মিয়া জানান, গত কয়েক বছর ধরে ফারুক লাউ চাষ করে অনেক টাকা লাভ করেছে। তার ঘর-বাড়ি ও চলাফেরায় অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তা দেখে গ্রামের অনেক চাষি এখন লাউ চাষ করছেন। অনেকেই সফল হচ্ছেন।
স্থানীয় লাউ চাষি মো. সেলিম (৪৫) জানান, তিনি ফারুকের দেখাদেখি ১৮ হাজার টাকা খরচ করে ৪৪ শতাংশ জমিতে লাউ চাষ করেছেন। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে সঠিকভাবে ক্ষেতে সার-ওষুধ দিয়েছেন। ক্ষেতে অনেক লাউ হয়েছে। এ পর্যন্ত ১ লাখ টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। যে লাউ আছে তাতে আরও ১ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন।
ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা কৃষি বিভাগ সব কৃষককে প্রশিক্ষণ ও সঠিক পরামর্শ দিয়ে সাবলম্বী করার চেষ্টা করছি। ফলে অনেক কৃষক আমাদের দিক-নির্দেশনা ও সঠিক পরামর্শে সাবলম্বী হয়েছে।’
জুয়েল সাহা বিকাশ/এসইউ/এমকেএইচ