কম খরচে ভুট্টা চাষে সফল জীবক চাকমা
পাহাড়ের বিস্তীর্ণ মাঠে তামাকের পরিবর্তে জায়গা করে নিয়েছে ভুট্টা। দেরিতে হলেও পাহাড়ে ভুট্টা চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন কৃষকরা। কম খরচে বেশি মুনফার আশায় ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন তারা। অনেকেই ইতোমধ্যে সাফল্যের দেখা পেয়েছেন।
ভুট্টা চাষে সফল হয়েছেন খাগড়াছড়ি সদরের কমলছড়ি এলাকার জীবক চাকমা। ২০১০ সাল থেকে ৫ একর জমিতে ভুট্টা চাষ শুরু করেন তিনি। গত ৮ বছর ধরে ভুট্টা চাষ করে যাচ্ছেন। তার সফলতা দেখে অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তবে এ সাফল্যের পেছনে কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ ছাড়া আর কোন সহযোগিতা পাননি তিনি।
জীবক চাকমা জানান, তার উৎপাদিত ভুট্টা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয় না। ক্ষেত থেকে উঠানোর পর মোচা থেকে ভুট্টা আলাদা করে তা রোদে শুকানো হয়। মোচা থেকে ভুট্টা আলাদা করতে নিজেই মাড়াইকল স্থাপন করেছেন। মোচা থেকে আলাদা করে শুকিয়ে তারপর চট্টগ্রামের বিভিন্ন কোম্পানির কাছে সরবরাহ করেন তিনি।
> আরও পড়ুন- ভোলায় তরমুজের ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
তিনি জানান, অনুকূল আবহাওয়া থাকায় চলতি মৌসুমে ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর প্রতি একরে প্রায় ১১০-১২০ মণ ভুট্টা উৎপাদিত হয়েছে। চলতি মৌসুমে প্রতি একরে ৪০-৪৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।
জানা যায়, রোগ-বালাই এবং উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় ভুট্টা চাষকে বেছে নিচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। ভুট্টা সাধারণত সেদ্ধ ও পুড়িয়ে খাওয়া যায়। এছাড়া ভুট্টার পাতা গো-খাদ্য হিসেবে, কাণ্ড ও মোচা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কৃষি সংশ্লিষ্টদের মতে, সাধারণত বেলে ও ভারি এটেল মাটি ছাড়া অন্য সব মাটি ভুট্টা চাষের উপযোগী। তবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাযুক্ত উর্বর বেলে দো-আঁশ মাটি ভুট্টা চাষের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট।
জীবক চাকমা জানান, পাহাড়ের সমতল ভূমি ভুট্টা চাষের উপযোগী হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এর আবাদ। জেলা সদর ছাড়াও পানছড়ি, দীঘিনালা, মাটিরাঙ্গায় ভুট্টার চাষ হচ্ছে। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ভুট্টা চাষ পাল্টে দিতে পারে খাগড়াছড়ির অর্থনীতির চিত্র।
> আরও পড়ুন- স্মার্টফোন বদলে দিয়েছে তিস্তাপাড়ের কৃষি
সদর উপজেলার কৃষি অফিসার মো. রিয়াজুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে জেলা সদরে প্রায় ৮০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া এবং সঠিকভাবে যত্ন নিলে প্রতি হেক্টরে ৭ থেকে সাড়ে ৮ মেট্রিক টন ফলন পাওয়া সম্ভব।
মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এসইউ/আরআইপি