ভুট্টার অ্যাপ ব্যবহার করে সফল শতাধিক নারী
ভুট্টার অ্যাপ ব্যবহার করে তিস্তার চরাঞ্চলে এ বছর ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে আবাদ করা হয়েছে ভুট্টা। তিস্তা নদীর বিভিন্ন চরাঞ্চলে ব্যাপকভাবে ভুট্টার আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।
তিস্তার চরাাঞ্চলের চলতি বছর পল্লীশ্রী প্রতীক প্রকল্পের আওতায় ভুট্টার অ্যাপ ব্যবহার করে বাম্পার ফলন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. রশীদুল হাসান এটি তৈরি করেন। তিস্তাপাড়ের দক্ষিণ খড়িবাড়ী গ্রামের নারী গবেষকদল এ অ্যাপ ব্যবহার করে বাম্পার ফলনের আশা করেন।
স্থানীয়ভাবে ভুট্টা চাষিরা ডিমলায় ভুট্টা সংরক্ষণ কেন্দ্রের পাশাপাশি ভুট্টা প্রক্রিয়াজাত কারখানা চালুর দাবি করেছেন। কৃষকরা জানান, ভুট্টা প্রক্রিয়াজাত কারখানা চালু হলে স্থানীয় বাজারে ভুট্টার দাম নিশ্চিত হবে। পাশাপশি এলাকার বেকারদের কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে। কৃষি বিভাগের পাশাপশি ভুট্টা চাষিদের স্বাবলম্বী ও বাজার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে বেসরকারি সংস্থা পল্লীশ্রী।
> আরও পড়ুন- রাজবাড়ীতে বেড়েছে হলুদের আবাদ
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৯ হাজার ২শ’ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৮৫০ হেক্টর। উপজেলায় ২১ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে অর্ধেক জমিতে ভুট্টা আবাদ করা হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৮ হাজার মেট্রিক টন।
দক্ষিণ খড়িবাড়ী গ্রামের কৃষক সালেহা বেগম (৩৮) জানান, ভুট্টার অ্যাপ ব্যবহার করার ফলে এবার ৮ বিঘা জমিতে ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশাবাদী তিনি। অ্যাপ ছাড়াও গুগল সার্চ ইঞ্জিন, প্রতীক এসএমএস এবং প্রতীক কল সেন্টারের মাধ্যমে বালাইনাশকসহ বিভিন্ন পরামর্শ পেয়েছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে এবার প্রতি বিঘা জমিতে ৩০-৩৫ মণ হারে বা তারও বেশি ফসল তুলতে পারবেন।
একই গ্রামের সেলিনা বেগম (৩৬) জানান, পল্লীশ্রী রিকল-২০২১ প্রকল্পটি উন্নতমানের বীজ সংগ্রহ করতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।
কৃষক আসমা বেগম (৩২) জানান, তিস্তা নদীতে বন্যার সময় পলি আসে। পলিতে সার কম প্রয়োগ করেও ভালো ফসল তুলতে পারবেন বলে তিনি আশা করেন। প্রতীক প্রকল্পটি ভুট্টা চাষের প্রশিক্ষণ ও ভুট্টার অ্যাপ সরবারহ করায় বাম্পার ফলন হয়েছে।
> আরও পড়ুন- অনাবাদী জমিতে আমলকি চাষে সফল আব্দুল হাই
ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেকেন্দার আলী বলেন, ‘সরকারিভাবে মনিটরিং করে উন্নতমানের ভুট্টা বীজ ও কম মূল্যে সারের বিষয়টি নিশ্চিত করায় ব্যাপকভাবে চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভুট্টার অ্যাপ ছাড়াও কৃষি মন্ত্রণালয়ের এটুআই প্রকল্পের কৃষকের ডিজিটাল ঠিকানা, কৃষকের জানালা ও বালাইনাশক নির্দেশিকা অ্যাপ ব্যবহার করায় ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে।’
পল্লীশ্রী প্রতীক প্রকল্পের প্রজেক্ট অফিসার মকিম চৌধুরী বলেন, ‘অতিদরিদ্র নারীদের ভুট্টা চাষে সাবলম্বী করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এছাড়াও দক্ষিণ খড়িবাড়ী গ্রামে শতাধিক ভুট্টা গবেষক তৈরি করা হয়েছে। ফলে ভুট্টার অ্যাপ ব্যবহার করে তারা সফল হয়েছে।’
জাহেদুল ইসলাম/এসইউ/এমকেএইচ