সুনামগঞ্জে ১ হাজার কোটি টাকার ধান উৎপাদন
৩ হাজার ৭৪৭.১৮ বর্গকিলোমিটারের জেলা সুনামগঞ্জ। তার মধ্যে হাওর আছে সর্বমোট ১৩৭টি। তবে চলতি মৌসুমে প্রায় ছোট-বড় ৬০টি হাওরের আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছে। বিশেষ করে এবার সুনামগঞ্জে তিন দফা বন্যায় আউশ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ কারণে হাওরের কৃষকেরা ছিলেন হতাশাগ্রস্ত। এমন অবস্থায় আমনের আবাদ নির্বিঘ্ন ও ফলন ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
প্রান্তিক কৃষক আবু সায়হাম প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ করে ৫০ কেয়ার জমিতে আমন চাষ করেছিলেন। যেখান থেকে প্রায় ৮০০ মণ ধান পেয়েছেন। বর্তমানে বছরে খাওয়ার জন্য রেখে প্রায় ৮ লাখ টাকার ধান মাঠেই বিক্রি করেছেন। কৃষক আবু সায়হাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘হাওরাঞ্চলে এ বছর ধানের ফলন অন্য বছরের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। এরই মধ্যে প্রতি মণ ধান ১১০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছি।’
শুধু আবু সায়হাম নন, এরই মধ্যে সুনামগঞ্জে প্রায় ২ লাখ কৃষক আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ হারভেস্টর মেশিন দিয়ে ধান কাটছেন, কেউ সেই ধান গোলায় তুলছেন, কেউবা মাঠেই ধান শুকিয়ে বস্তাবন্দি করে প্রতি মণ ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকায় বিক্রি করছেন।
এ বছর জেলায় ২৫ প্রজাতির ধান চাষ করেছেন প্রান্তিক কৃষকেরা। যার মধ্যে বিনা-১৭, ব্রি-৪৯, ৯০, ৯৫ ও বিআর-২২, ব্রি-৮৭ বেশি চাষ হয়েছে। এসব চাষ হয়েছে সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, শান্তিগঞ্জ, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলায়। যেখান থেকে প্রতি বিঘা জমিতে ১৪-১৮ মণ ধান উৎপাদিত হয়েছে। হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয়েছে ৪.৫ মেট্রিক টন।
এদিকে হাওরের কৃষক সুফিয়ান, বাদশা ও এখলাসুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এ বছর আমন ধানের ফলন ভালো হওয়ায় আমরা অনেক খুশি। সেই সাথে বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছে; সেটাও কাটিয়ে উঠতে পারবো।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জে ৮৩ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে অর্জিত হয়েছে প্রায় ৮৩ হাজার ৪৯৫ হেক্টর। যেখান থেকে ৩ লাখ ২১ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হবে। যার বাজারমূল্য ১ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আবহাওয়া ভালো থাকায় কৃষকেরা নিরাপদে ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই, শুকানো শেষে গোলায় তুলছেন। এরই মধ্যে ৬৫ ভাগ ধান কাটা হয়েছে।’
এসইউ/এএসএম