জামালপুরে ফুলকপি ও লাউয়ের মিশ্র চাষে লাভবান আনিস
মো. আনিস বয়স ৪৫ অতিক্রম করেছেন। এর মধ্যে ৩০ বছর ধরেই কৃষক হিসেবে যুক্ত আছেন। প্রতি বছর বিভিন্ন মৌসুমি শাক-সবজি চাষ করেন। এবারও নিজের ৩ বিঘা জমিতে ফুলকপি ও লাউয়ের মিশ্র চাষ করেছেন। অতিরিক্ত লাভের আশায় নিয়মিত যত্ন নিচ্ছেন। তার বিশ্বাস এবারও লাভবান হবেন।
জামালপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীরচড ইউনিয়নের বাওরামারি এলাকার বাসিন্দা মো. আনিস। কৃষিকাজ করেই তিনি সফল। পরিবারের হাল ধরে আছেন কৃষিকাজের ওপর নির্ভর করেই। নিজের ৩টি ক্ষেতে এবার ১৭ হাজার ফুলকপি লাগিয়েছেন। তার ওপর মাচা দিয়ে ২০০ লাউয়ের চারা রোপণ করেছেন। যা কয়েকদিনের মধ্যে উত্তোলন করে বাজারে তুলতে পারবেন।
এই কৃষক জানান, ১৭ হাজার ফুলকপি চারার প্রত্যেকটিতে ৫-৬ টাকা করে ব্যয় হয়েছে। ২০০ লাউ চারা ও মাচার জন্য ব্যয় হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। ফুলকপি চারা রোপণে এ পর্যন্ত ৯০ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকা খরচ করেছেন। আরও কিছু টাকা খরচ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। রোপণের দেড় মাস পরই উত্তোলন করা হয় এসব সবজি। নিয়ম অনুযায়ী আগামী ২০ দিনের মধ্যে ফুলকপি তুলতে পারবেন। ফুলকপি শেষ হয়ে আসার আগেই লাউ উত্তোলন শুরু হবে। এ মিশ্র চাষে তিনি বেশি লাভবান হওয়ার আশা করছেন।
মো. আনিস বলেন, ‘প্রায় ৩-৪ লাখ টাকা মূল্যে সবজি বিক্রি করা সম্ভব। বিগত দিনেও প্রায় ৫০ শতাংশ লাভ করে আসছি। এ বছর মিশ্র ফসলি ক্ষেতে জৈব, টিএসপি আর গোবর সার প্রয়োগ করেছি। তিনদিন পর পর চারায় পানি দিই। অক্টোবরের মাঝামাঝি চারা রোপণ করা হয়। উৎপাদিত ফসল শীতের শুরুর দিকে নভেম্বরের শেষে উত্তোলন করে থাকি।’
তার সহযোগী সুজনের দেখভালে এখন পর্যন্ত ভালো ফলনের দেখা পেয়েছেন। প্রতি বছরই ১৭ থেকে সাড়ে ১৭ হাজার চারার মধ্যে অন্তত ১ হাজার ফুলকপি চারা বাদ যায়। এতে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। নিয়মিত কাজ করা সুজন বলেন, ‘এবার মিশ্র ক্ষেতে বাম্পার ফলন হয়েছে। এবারও ভালো লাভবান হবো। এখন পর্যন্ত আবাদের তেমন কোনো চারা বাদ যায়নি। সে ক্ষেত্রে অল্প কিছু চারা বাদ পড়লেও প্রভাব পড়বে না।’
জামালপুর কৃষি কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘বর্তমানে জামালপুরে ১১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে কৃষকেরা শীতকালীন চাষাবাদ করছেন। আমরা নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমরা শুধু ফুলকপি ও লাউ চাষির সুবিধা দেওয়ার কথা ভাবি না। সব কৃষিপণ্য চাষিদের সেবা দিতে হয়। তবে মিশ্র ফসল চাষ করে একাধিক কৃষক বেশি লাভবান হচ্ছেন। তবে রোগবালাইমুক্ত চাষাবাদের পাশাপাশি ভালো ফলন পাওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকি।’
এসইউ/এএসএম