৩ ধরনের রোগ থেকে ড্রাগন ফল রক্ষার উপায়
ড্রাগন ফল মূলত আমেরিকার প্রসিদ্ধ একটি ফল। যা বর্তমানে আমাদের দেশেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ২০০৭ সালে থাইল্যান্ড, ফ্লোরিডা ও ভিয়েতনাম থেকে এ ফলের বিভিন্ন জাত আনা হয়। ড্রাগন ফলের গাছ এক ধরনের ক্যাকটাস জাতীয় গাছ। এ গাছের কোনো পাতা নেই। ড্রাগন ফলের গাছ সাধারণত ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।
ড্রাগন ফল সাধারণত তিন প্রজাতির হয়ে থাকে। যথা- লাল ড্রাগন ফল বা পিটাইয়া, কোস্টারিকা ড্রাগন ফল, হলুদ রঙের ড্রাগন ফল। বাংলাদেশে উদ্ভাবিত জাতগুলো হলো- বারি ড্রাগন ফল-১, বাউ ড্রাগন ফল-১ (সাদা), বাউ ড্রাগন ফল-২ (লাল), বাউ ড্রাগন ফল-৩। বিদেশি ড্রাগন ফলটি বেশ সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন।
এরই মধ্যে ফলটি বাংলাদেশের ভোক্তা পর্যায় বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় কৃষকেরা বাণিজ্যিকভাবে সফল চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এবার আসুন, আমরা ফলটির কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত রোগ এবং তার প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিই।
ফলের পচন রোগ
জৈব ব্যবস্থাপনা
• রোগমুক্ত চারা এবং জাত ব্যবহার করা।
• আক্রান্ত অংশ বা ফল তুলে পুড়ে বা পুতে ফেলা।
• পরিমিত সেচ প্রয়োগ করা।
• রোগ দেখা দিলে পানি সেচ বন্ধ করতে হবে।
• প্রত্যায়িত অথবা রোগমুক্ত এলাকা থেকে সুস্থ ও রোগমুক্ত বীজ সংগ্রহ করা।
• যে জমি সব সময় ভেজা বা স্যাঁতস্যাঁতে থাকে সে জমিতে কখনোই চাষ না করা।
• জমিতে হলুদ আঠালো ফাঁদ ঝুলিয়ে রাখা।
• ফসলে পর্যাপ্ত আলো থাকা এবং আগাছামুক্ত চাষাবাদ।
রাসায়নিক ব্যবস্থাপনা
মেনকোজেব গ্রুপের জেনেজেব (জেনেটিকা) বা কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের এগরবন (জেনেটিকা) ছত্রাকনাশক প্রতিটি আলাদা ভাবে ০.২% হারে মিশিয়ে ১২-১৫ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে। ওষুধ প্রয়োগের পাঁচদিন পর্যন্ত ফসল তোলা যাবে না। প্রয়োজনে উপজেলা কৃষি অফিসে কৃষিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
আরও পড়ুন
লাল মরিচা বা রাস্ট রোগ
জৈব ব্যবস্থাপনা
• অতি তাপ শুষ্ক পরিহার করা।
• তাপমাত্রার ওঠা-নামা পরিহার করা।
• জমিতে হলুদ আঠালো ফাঁদ ঝুলিয়ে রাখা।
• পরিমিত সেচ প্রয়োগ করা।
• পরিমিত সার প্রয়োগ করা।
• ফসলে পর্যাপ্ত আলো থাকা এবং আগাছামুক্ত চাষাবাদ।
• রোগমুক্ত চারা ব্যবহার করা।
• আক্রান্ত অংশ তুলে পুড়ে বা পুতে ফেলা।
রাসায়নিক ব্যবস্থাপনা
এজোক্সিস্ট্রবিন+সিপ্রোকোনাজল গ্রুপের মনা (জেনেটিকা) ছত্রাকনাশক প্রতিটি আলাদা ভাবে ০.২% হারে মিশিয়ে ১২-১৫ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে। ওষুধ প্রয়োগের পাঁচদিন পর্যন্ত ফসল তোলা যাবে না। প্রয়োজনে উপজেলা কৃষি অফিসে কৃষিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
কাণ্ড ও গোড়া পচা রোগ
জৈব ব্যবস্থাপনা
• রোগমুক্ত চারা ব্যবহার করা।
• আক্রান্ত অংশ তুলে পুড়ে বা পুতে ফেলা।
• পরিমিত সেচ প্রয়োগ করা।
• রোগ দেখা দিলে পানি সেচ বন্ধ করতে হবে।
• প্রত্যায়িত অথবা রোগমুক্ত এলাকা থেকে সুস্থ ও রোগমুক্ত বীজ সংগ্রহ করা।
• বপনের পর যত শীঘ্র সম্ভব গাছের গোড়ায় মাটি তুলে দেওয়া।
• এ রোগ দেখামাত্র আক্রান্ত জমিতে সেচ প্রদান, নিড়ানি দেওয়া, মালচিং ইত্যাদি বন্ধ করা।
• যে জমি সব সময় ভেজা বা স্যাঁতস্যাঁতে থাকে, সে জমিতে কখনোই চাষ না করা।
• জমিতে হলুদ আঠালো ফাঁদ ঝুলিয়ে রাখা।
রাসায়নিক ব্যবস্থাপনা
এজোক্সিস্ট্রবিন+সিপ্রোকোনাজল গ্রুপের মনা (জেনেটিকা) ছত্রাকনাশক প্রতিটি আলাদা ভাবে ০.২% হারে মিশিয়ে ১২-১৫ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে। ওষুধ প্রয়োগের পাঁচদিন পর্যন্ত ফসল তোলা যাবে না। প্রয়োজনে উপজেলা কৃষি অফিসে কৃষিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
এসইউ/এমএস