কাজুবাদাম কোথায় কখন চাষ করবেন?
আন্তর্জাতিক বাজারে কাজুবাদামের চাহিদা প্রচুর। এই চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। বাণিজ্যিক কৃষির যে সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশে; সেই বাণিজ্যিকীকরণের বাহক হিসেবে কাজুবাদামের সম্ভাবনা ব্যাপক। প্রাথমিক অবস্থায় কাজুবাদাম গাছ পাহাড়ি অঞ্চলে কৃষি পুনর্বাসন কার্যক্রমের সঙ্গে ভূমিক্ষয়, ভূমিধস ইত্যাদির জন্য লাগানো হলেও বর্তমানে গাছটি দ্রুত বর্ধনশীল, পরিবেশবান্ধব এবং লাভজনক হওয়ায় পাহাড়ি বা সমতল জমির পতিত জায়গায় রোপণের কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।
কাজুবাদাম একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফল। বাংলাদেশের সর্বত্র এর চাষ সম্ভব। আমাদের দেশের জলবায়ু কাজুবাদাম চাষের জন্য বেশ সহায়ক। কাজুবাদামকে বলা হয় প্রাকৃতিক পুষ্টিকর ফল। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রাচীন জাতের কাজুবাদাম চাষ হয়ে থাকে। এ জাতের কাজুবাদামের ফলন কম এবং দেরিতে ফলন পাওয়া যায়। ইদানীং ভারত, ভিয়েতনাম ও শ্রীলঙ্কায় কিছু কিছু উন্নত জাত আবিষ্কার হয়েছে। যেগুলোতে ফলন ৪-৫ গুণ বেশি এবং ছোট ছোট গাছে প্রচুর ফলন দেয়।
কাজুবাদাম চাষের উপযুক্ত আবহাওয়া ২৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থেকে ২৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা। ১০০০ মিমি থেকে ২০০০ মিমি বার্ষিক বৃষ্টিপাত, ৫০০ মিটার থেকে ১০০০ মিটার সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা এবং বন্যামুক্ত অম্লীয় বালি বা বালি দোআঁশ মাটি। এসব বিষয়গুলো বিবেচনা করলে কাজুবাদাম চাষের উপযুক্ত জমি পাহাড়ি অঞ্চলের প্রচুর পরিমাণে আছে। পাহাড়ি এলাকায় নভেম্বর থেকে প্রায় এপ্রিল-মে মাস পর্যন্ত সাধারণত কোনো বৃষ্টিপাত হয় না। অর্থাৎ ৫-৬ মাস পাহাড়ি ভূমি বৃষ্টিহীন অবস্থায় থাকে। আবার সেখানে সেচ দেওয়ার তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই।
মার্চ-এপ্রিল মাসে প্রচণ্ড খরা এবং গরম হাওয়া বিদ্যমান থাকে। সে অবস্থায়ও কাজুবাদাম বেশ ভালো ফলন দিয়ে থাকে। আবার স্বল্প মূল্যের জমি এবং কর্মঠ শ্রমিক প্রাপ্যতা এখানে আছে। জমি হলো কৃষির মূল উপাদান। এ ছাড়া কৃষি অচল ও অসম্ভব। সমতল এলাকায় কাজুবাদাম করার মতো স্বল্প মূল্যের ভূমি পাওয়াটা দুষ্কর। বান্দরবানে ১,৭৯৭ হেক্টর জমিতে ৮.৬৯ লাখ কাজুবাদামের গাছ আছে। বান্দরবানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফলন হয় থানচি উপজেলায়। মোট আবাদের ৫০ শতাংশই হয় এ উপজেলায়। এরপর রুমা, রোয়াংছড়ি এবং সদরে কাজুবাদামের চাষ হয়।
সূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস।
এসইউ/জেআইএম