ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

শরীয়তপুরে বাড়ছে রবিশস্য ‘কালোজিরা’ চাষ

বিধান মজুমদার | প্রকাশিত: ১১:৩৩ এএম, ১০ মার্চ ২০২৪

সব রোগের মহৌষধের কথা বললে প্রথমে চলে আসবে ‘কালোজিরা’র নাম। এটি যেমন মসলা হিসেবে পরিচিত; তেমনই বহু গুণে গুণান্বিত। দিন দিন কালোজিরার ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বাজারে চাহিদাও বেড়েছে কয়েক গুণ।তাই তো শরীয়তপুর জেলায় রবি ফসল হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছি ফসলটি। লাভজনক ফসলটি চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন স্থানীয়রা।

শরীয়তপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তর জানায়, গত মৌসুমে জেলার ছয়টি উপজেলায় ৩ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে কালোজিরা চাষ হয়েছে। যা প্রতি হেক্টর জমিতে ১ টন করে উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর জেলায় কালোজিরা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৭২০ হেক্টর। তবে চলতি মৌসুমে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ২০০ হেক্টর জমির চাষ কমে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৫২০ হেক্টর। চাষ কমলেও ফলন হয়েছে সন্তোষজনক। যা অন্য বছরের তুলনায় হেক্টর প্রতি বাড়বে বলে ধারণা কৃষি বিভাগের।

সরেজমিনে জানা যায়, মাঠজুড়ে কালোজিরার হালকা নীলাভ বর্ণের ফুলে ছেয়ে আছে। এর মধ্যে কিছু কিছু ফল পুষ্ট হয়েছে। বেশিরভাগ ফলই তেলবীজে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

শরীয়তপুরে বাড়ছে রবি ফসল ‘কালোজিরা’র চাষ

সদর উপজেলার বিলাসপুর এলাকার কৃষক মাহতাবউদ্দিন শেখ (৬৬)। গত বছর ৫০ শতাংশ জমিতে করেছিলেন গম চাষ। তবে বাজারে ভালো দাম না পাওয়ায় তেমন একটা লাভের মুখ দেখেননি। এ বছর একই জমিতে করেছেন কালোজিরা চাষ। ফলন ভালো হওয়ায় দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন এ কৃষক।

মাহতাবউদ্দিন শেখ বলেন, ‘মৌসুমের প্রথমে বৃষ্টি হওয়ায় ভাবছিলাম কালোজিরা বুনতে পারবো না। তবে আল্লার ভরসায় পরে বুনেই ফেলছিলাম। এত ভালো ফলন হবে কল্পনা করি নাই। বাজারে কালোজিরার বেশ ভালো দাম। আশা করছি, এইবার অনেক বেশি লাভবান হতে পারবো।’

আরও পড়ুন
কালীগঞ্জে রেকর্ড পরিমাণ সরিষা চাষ
কালোজিরার মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌচাষিরা

জাজিরার মূলনা এলাকার কৃষক শাহজালাল ঢালী বলেন, ‘একসময় আমাদের এলাকায় কালোজিরার চাষ বন্ধ রেখেছিলাম। ধনিয়া আর সরিষাই বেশি চাষ করতাম। এখন কালোজিরার চাষ বাড়িয়ে দিয়েছি। বাকিসব ফসলের চাইতে কালোজিরার দাম অনেক বেশি। এতে আমরা বেশি লাভ করতে পারি।’

শরীয়তপুরে বাড়ছে রবি ফসল ‘কালোজিরা’র চাষ

একই এলাকার রমজান বেপারী বলেন, ‘আমার পাশের জমির মালিক গত বছর কালোজিরা চাষ করে অনেক লাভবান হয়েছিল। তাই এ বছর আমিও ১০ শতাংশ জমিতে কালোজিরা চাষ করলাম। ফলন দেখে মনে হচ্ছে, এবার অনেক বেশি লাভ করতে পারবো। আগামীতে আরও চাষের ইচ্ছা আছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মোহাম্মদ রিয়াজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘কালোজিরা একটি লাভজনক ফসল। ওষুধি গুণাগুণ সম্পন্ন হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা বেশ ভালো। দিন দিন কৃষকদের মাঝে ফসলটি দারুণ সাড়া পাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘চলতি মৌসুমে বৃষ্টিপাতের কারণে আমাদের পরিমাণ কিছুটা কম হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় গড় ফলন বেশ ভালো হওয়ায় উৎপাদন অনেক বাড়বে। কৃষির বিভাগের পক্ষ থেকে উৎপাদন বাড়াতে প্রতিটি উপজেলায় কৃষকদের পরামর্শের পাশাপাশি প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

এসইউ/জেআইএম

আরও পড়ুন