ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

‘পাখির চর’ নামকরণ

শৌলজালিয়ার নিঝুম চরে পাখির অভয়াশ্রম

জেলা প্রতিনিধি | ঝালকাঠি | প্রকাশিত: ১২:৫৩ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া-বেতাগীর মাঝখানে বিষখালী নদীতে রয়েছে বিশাল চর। এ চরে থাকে টুনটুনি, বক, ময়না, টিয়া, ঘুঘু, প্যাঁচা, বুলবুলি, কাক, শালিক, বাবুই, ডাহুক, বৌরি, মাছরাঙা, পানকৌড়ি, বউ কথা কও, দোয়েল, কোকিল, কাঠঠোকড়া, চিল, হরিয়ালসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় পাখি। শীতকালে আশ্রয় নেয় বেশ কয়েক জাতের পরিযায়ী পাখিও। পাখির নিরাপদ বসবাসের জন্য বিভিন্ন গাছে ঝোলানো রয়েছে হাড়ি। উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চরটি দেখভাল করছে। স্থানীয় প্রশাসন চরটির নামকরণ করেছে ‘পাখির চর’।

জানা গেছে, ঝালকাঠির সুগন্ধা-গাবখান ও বিষখালী নদীর মোহনা থেকে উৎপত্তি হয়ে দক্ষিণে ২০৫ কিলোমিটারজুড়ে এঁকেবেঁকে বয়ে গেছে বিষখালী নদী। যা গিয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া-বেতাগীর মাঝখানে বিষখালী নদীতে রয়েছে বিশাল চর। সেই চরকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয় কাঠালিয়া উপজেলা প্রশাসন। রক্ষণাবেক্ষণ ও সঠিক তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয় শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদকে।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়রা জানায়, কাঁঠালিয়ার দক্ষিণ শৌলজালিয়া মৌজার ১০৩ দশমিক ৩ একর জমি পাখির অভয়ারণ্যের আওতায় থাকবে। সেখানে পাখি শিকার, মাটি কাটা, গাছ কাটা, বালু উত্তোলন ও গরু-মহিষ চরানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রকৃতিকে সবুজ ও সুন্দর রাখতে ‘এসো পাখির বন্ধু হই’ স্লোগানে সেখানে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। পাখির বাসার জন্য বিভিন্ন গাছে ঝোলানো হয়েছে হাড়ি। উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চরটি দেখভাল করছে।

শৌলজালিয়ার নিঝুম চরে পাখির অভয়াশ্রম

শৌলজালিয়া খেয়াঘাট থেকে স্পিডবোটে পৌঁছে হেঁটে পরিদর্শন করেন ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. ওয়ালিউল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল। এ সময় কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নেছার উদ্দিন ও অফিসার ইনচার্জ মো. নাসির উদ্দিন সরকার, শৌলজালিয়ার চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন রিপন উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন
পরিবেশবাদী নাগরিক সংগঠন ‘ধরা’ এর আত্মপ্রকাশ
বিরল প্রজাতির গোলাপি ডলফিন
পরিত্যক্ত টায়ারে নান্দনিক ছাদ বাগান

ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন রিপন জানান, ৩ বছর আগে এখানে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। নোটিশে লেখা আছে, মহিষ, গরু, ছাগল পালন করে ঘাস খাওয়ানো বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে চড়াবেন না। মাটি, বালু, গাছ কেউ কাটবেন না। চরের চারপাশে কেউ মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে ঝাউ বা গাছের ডাল ফেলবেন না। উভয়ই আইনত অপরাধ বলে গণ্য হবে। এ চর আপনার আমার সকলের জন্য প্রাকৃতিক সম্পদ, যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে।

শৌলজালিয়ার নিঝুম চরে পাখির অভয়াশ্রম

মাহমুদ হোসেন রিপন বলেন, ‘২০২০ সালে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় প্রয়োজনের তাগিদে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় পাখির চর রক্ষণাবেক্ষণে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সঠিকভাবে সংরক্ষণে সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছি। এটিকে আরও দৃষ্টিনন্দন করতে ওয়াচটাওয়ার নির্মাণসহ বেশ কয়েকটি উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে। প্রাকৃতিক নৈসর্গিক দৃশ্য দেখতে একসময় বিনোদনপ্রেমীদের ভিড় হবে।’

শৌলজালিয়া ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে এ চরকে ‘শেখ রাসেল ইকোপার্ক’ নামকরণ করে আরও সমৃদ্ধশালী করার দাবি জানান মাহমুদ হোসেন রিপন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নেছার উদ্দিন বলেন, ‘বিষখালী নদীর বুকে জেগে ওঠা ৩০ বছর আগের এ নৈসর্গিক চরকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে। এতে পাখির বংশ বৃদ্ধি পেয়ে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা হবে।’

মো. আতিকুর রহমান/এসইউ/এমএস

আরও পড়ুন