ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

বাংলাদেশের অপরূপ তিন নদী

সাজেদুর আবেদীন শান্ত | প্রকাশিত: ১২:২৮ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদীর কাছে আমাদের অনেক ঋণ। প্রকৃতির অপরূপ দান এই নদীগুলো আমাদের জীববিকারও অন্যতম মাধ্যম। নদীকেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে অনেক সভ্যতা। গড়ে উঠেছে বসতবাড়ি এবং ব্যবসাকেন্দ্র। তাছাড়া নদীর রূপ, পানি, কলকল শব্দ সবাইকে মুগ্ধ করে। তাই বিশ্ব নদী দিবসে জেনে নিই তিনটি অপরূপ নদী সম্পর্কে—

গণেশ্বরী নদী
আমার দেখা বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর নদী গণেশ্বরী। এটি নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরা ইউনিয়নের সাত শহীদের মাজারের পাশ দিয়ে প্রবাহিত। নদীটি ভারতের মেঘালায় রাজ্যের পাহাড় থেকে উৎপত্তি হয়ে বাংলাদেশের নেত্রকোনা হয়ে প্রবেশ করেছে। নদীটি বাংলাদেশের যে জায়গায় এসে প্রবাহিত হয়েছে, সে জায়গাটি একদম ভারত-বাংলাদেশের নো-ম্যান্স জোন।

আরও পড়ুন: স্মার্ট কৃষিকে সক্ষম করবে যেসব প্রযুক্তি

বাংলাদেশ অংশে নদীটি মেহগনি গাছের বাগান দিয়ে আবৃত। নদীর এ অংশটুকু থেকে চোখ জুড়ানো ভারতের মেঘালায় রাজ্যের পাহাড়গুলো দেখা যায়। দেখে মনে হবে যেন ঘন সবুজের স্তূপ। এখানে পাখির কিচিরমিচির ছাড়া আর কোনো শব্দ কানে ভেসে আসে না। নদীর আরেকটি চমৎকার দৃশ্য হলো ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে ও নারী-পুরুষ ভেদাভেদ ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাটু পানিতে নেমে সংগ্রহ করছে নুরি পাথর। নদীর এ দৃশ্যই সবচেয়ে মনোহর।

সোমেশ্বরী নদী
এ নদী সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাক্ষেত্র। নদীটিকে এক মায়াবী কন্যার মতো মনে হয়। অপলক তাকিয়ে থেকে একটি দিন পার করা যায় এ নদী দেখে। নদীটি নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার পাশ দিয়ে প্রবাহিত। সোমেশ্বরী নদী ভারতের মেঘালয়ের গারো পাহাড়ের সীমাসাংগ্রী থেকে উৎপন্ন হয়ে দুর্গাপুরে প্রবেশ করেছে। বছরের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে নদীটি ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করে। তবে এর আসল সৌন্দর্য ফুটে ওঠে শীতকালে। শীতকালে নদীতে প্রায় হাটু পানি থাকে।

আরও পড়ুন: সাবুদানা কী? এটি কীভাবে তৈরি হয়?

এ নদীর পানি খুবই স্বচ্ছ। একদম কোমর পানি বা হাটু পানিতেও তলদেশের স্বচ্ছ বালু দেখা যায়। নদীটি অনেক খনিজ সমৃদ্ধ। কয়লা ও বালু সমৃদ্ধ। সোমেশ্বরীর তীরেই আছে বিখ্যাত বিজয়পুরের চিনামাটির পাহাড়। চিনা বা সাদা মাটি ছাড়াও গোলাপি, লাল, বেগুনি ও ধূসর মূল্যবান মাটি আর কাচাবালি সোমেশ্বরীরই দান।

বাঙালি নদী
বাঙালি নদীও অন্যতম সুন্দর একটি নদী। এ নদীর উৎপত্তি নীলফামারী জেলার তিস্তা নদী থেকে। নদীটি গাইবান্ধা ও বগুড়া অংশে এসে বাঙালি নাম ধারণ করেছে। এ নদীর আসল সৌন্দর্য ছোট ছোট চর। নদীর মাঝে মাঝে এখন চরের দেখা মেলে। সেখানেও জনপদ গড়ে উঠেছে। তবে যে অংশে এখনো নাব্যতা আছে, পানি প্রবাহিত হয়; সেই অংশ যেন নবযৌবনা।

আরও পড়ুন: শহরের বুকে দেশি কই মাছের স্বাদ

নদীটি কোলাহলপূর্ণ। সব সময় নদীতে ছেলে-মেয়েদের লাফালাফি। এককথায় নদীটি যেন নদীপারের মানুষের খেলার সাথী। জেলেরা নৌকা নিয়ে নদীতে মাছ আহরণ করেন। তবে এ নদীতে সারাবছর প্রায় পানি প্রবাহিত হয়। এ জন্য এ নদীর তীরবর্তী অঞ্চলগুলো অনেক চাষাবাদ সমৃদ্ধ।

আসুন, আমরা নদীগুলো রক্ষায় উদ্যোগী হই। প্রকৃতির অপরূপ দান হিসেবে নদীগুলোকে বাঁচিয়ে রাখি। নদী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। নদী বাঁচলে কৃষক ও জেলে বাঁচবে।

এসইউ/জেআইএম

আরও পড়ুন