বন্যা থেকে ফসল রক্ষা করবেন যেভাবে
প্রতি বছরই বন্যায় অনেক অঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে বেশি ক্ষতি হয় ফসলের। প্রাকৃতিক এ দুর্যোগে ফসল রক্ষা করতে কৃষকদের আগাম প্রস্তুতি নিতে হয়। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জানতে হয় কিছু করণীয় সম্পর্কে। আসুন জেনে নিই বন্যায় ফসলের ক্ষতি মোকাবিলার বিভিন্ন উপায়-
১. বন্যার শুরুতেই বীজ, সার, কৃষি যন্ত্রপাতি উঁচু নিরাপদ স্থানে ভালোভাবে রাখতে হবে।
২. বন্যামুক্ত উঁচু জায়গায় বীজতলা তৈরি করা দরকার। এ ক্ষেত্রে কলাগাছের ভেলা বা চাটাইয়ের ওপর বীজতলা তৈরি করে রাখা যায়।
৩. বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চারার পাতায় পলিমাটি লেগে থাকলে পানি ছিটিয়ে তা ধুয়ে দিতে হবে।
৪. বন্যার পর বেঁচে যাওয়া চারা দ্রুত বাড়ার জন্য ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে।
আরও পড়ুন: লবণাক্ত মাটিতে কেনাফ চাষে সফলতার আশা
৫. জমির ভালো জায়গার সুস্থ চারা থেকে কিছু চারা তুলে ফাঁকা জায়গা পূরণ করতে হবে।
৬. পানি সরে যাওয়ার পর চারার পাতা ৮-১০ সেন্টিমিটার আগা কেটে বালাইনাশক স্প্রে করতে হবে।
৭. পাটগাছের ডগা কেটে মাটিতে পুঁতে দেওয়া। এগুলো থেকে নতুন ডালপালা বের হলে মানসম্মত বীজ উৎপাদন করা যায়।
৮. বন্যার পানি নেমে গেলে বিনা চাষে গিমাকলমি, লালশাক, ডাঁটা, পালং, পুঁই, ধনে, ভুট্টা, সরিষা, মাসকলাই, খেসারি, আলু চাষ করা যায়।
৯. বন্যার সময় টব, মাটির চাড়ি, কাঠের বাক্স, কাটা ড্রাম, পুরোনো টিন, পলিব্যাগ ও কলার ভেলায় ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, লাউ ও মরিচের চারা উৎপাদন করা যায়।
১০. আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত শাক-সবজি ও অন্য ফসলি জমির রস কমানোর জন্য মাটি আলগা করে ছাই মিশিয়ে দেওয়া যায়।
আরও পড়ুন: আষাঢ় মাসে ফসলের যত্ন
১১. স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী ইউরিয়া ও পটাশ সার প্রয়োগ করা উচিত।
১২. রোপিত ফলের চারার গোড়ার পানি নিকাশের জন্য নালার ব্যবস্থা করতে হবে।
১৩. প্রয়োজনে গোড়ায় মাটি দিয়ে সোজা করে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নেওয়া যায়।
১৪. গোড়ার মাটি শুকালে পরিমাণমতো সার দিতে হবে।
১৫. বন্যার পর জমিতে জো আসা মাত্রই চাষ ও মই দিয়ে অথবা বিনা চাষে ডিবলিং পদ্ধতিতে তুলা বীজ বপন করা যায়।
আরও পড়ুন: সোনালি আঁশকে ঘিরে স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা
১৬. পলিব্যাগে বা বীজতলায় তুলা বীজের চারা তৈরি করা যায়। পানি নেমে গেলে ইউরিয়া ও পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে।
১৭. আখের জমি প্লাবিত হওয়ার আগে গোড়ায় মাটি দিয়ে ভালোভাবে বেঁধে দিতে হবে। পানির স্রোতে আখের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে যথাসময়ে জমির আইলে ধৈঞ্চার বীজ বুনে দেওয়া ভালো।
১৮. পুরোনো পাতা এবং প্রতি ঝাড়ে ৫-৬টি সুস্থ কুশি রেখে অতিরিক্ত কুশি কেটে দিতে হবে।
১৯. পানি নেমে যাওয়ার পর আখ গাছ ঢলে পড়লে গাছের ঝাড় মুঠি করে বেঁধে দিতে হবে।
২০. বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর মাঠের ফসলের বাড়তি যত্ন নিতে হবে।
এসইউ/এএসএম