লিচুর ফলন ও দামে খুশি মেহেরপুরের চাষিরা
লিচুর ফলন ও দামে খুশি মেহেরপুরের চাষিরা। গত কয়েক বছর লিচু চাষে লোকসান হলেও এবছর অনেকটাই অনুকূল আবহাওয়া ছিল। লিচু চাষ করে কৃষকরা লাভবানও হচ্ছেন। কৃষি বিভাগ বলছে, অপরিপক্ব লিচু বাজারজাত করলে তাদের বিষয়ে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাছ থেকে লিচু পেড়ে জড়ো করা হচ্ছে বাগানে। সেখানে চলছে ছোট-বড় আর লাল-সবুজ রঙের লিচু বাছাই। রসালো টসটসে লিচুগুলো বাছাই করে আঁটি বাঁধার কাজ করছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী ও শ্রমিক। রং আর আকার অনুযায়ী বাধা হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন আঁটিতে। ভোক্তাদের অতি আগ্রহের লিচু পরম যত্ন সহকারে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। মেহেরপুর শহরের পৌর কলেজের সামনে রুস্তম আলীর বাগান থেকে এসব লিচু সংগ্রহ করছেন তারা। মৌসুমের প্রথম লিচু আহরণ করে তা স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে বাকিগুলো পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়।
আরও পড়ুন: লিচু ফেটে যাওয়া রোধে করণীয়
মেহেরপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড পাড়ার লিচু চাষি আশকার আলী জাগো নিউজকে জানান, এ বছর ৩০ বিঘা জমিতে লিচু গাছের পরিচর্যা করেছেন। আঁটি লিচুর পাশাপাশি কলম লিচু, বোম্বাই, চায়না থ্রি জাত আছে। চলতি মৌসুমে তীব্র দাবদাহ বয়ে গেছে এ অঞ্চরের ওপর দিয়ে। আবার নির্দিষ্ট সময়ে বৃষ্টিপাতের অভাব ছিল। ফলে লিচু কাঙ্ক্ষিত আকারের চেয়ে কিছুটা ছোট হয়েছে। তবে অন্য বছরের চেয়ে ফলন বেশি হওয়ায় লাভবান হবেন তিনি। গত বছরে যে গাছে ১০ কাউন্ট লিচু ছিল। সেই গাছে এ বছর ১৭ কাউন্ট লিচু হয়েছে। পাশাপাশি লিচুর বাজারদর ভালো।
লিচু বাগান মালিক রুস্তম আলী জাগো নিউজকে জানান, এ বছর পর্যাপ্ত লিচুর ফলন হয়েছে। গত কয়েক বছর লিচু চাষে লোকসান হয়েছে। এবার তীব্র গরম পড়লেও অনেকটাই লিচুর অনুকূল আবহাওয়া ছিল। ফলে অন্য বছরের চেয়ে এবার অনেক বেশি ফলন হয়েছে। আগামি এক সপ্তাহ বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কাঙ্ক্ষিত ফলনের পাশাপাশি লাভবান হবেন তিনি।
আরও পড়ুন: থাই পেয়ারা চাষে সফল নাটোরের দুই ভাই
বাগান মালিক মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, তার ১১ বিঘা লিচুর বাগান আছে। এবছর কোনো রোগবালাই না থাকায় লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। তবে লিচুর আকার কিছুটা ছোট হয়েছে। বাজারে দাম ভালো আছে। এবছর লিচু চাষ করে দাম ও ফলনে তিনি খুশি।
মাদারীপুর থেকে লিচু নিতে আসা ব্যবসায়ী মকলেচুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, সারাদেশে এ জেলার লিচুর চাহিদা আছে।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শংকর কুমার মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী চাষিরা লিচু গাছ ও ফলের পরিচর্যা করে ফলন ভালো পেয়েছে। জেলায় চলতি মৌসুমে ৬৯০ হেক্টর জমিতে লিচু বাগান আছে। এবার হেক্টরে ৪.৪ মেট্রিক টন লিচু পাওযার আশা করা যায়।’
আসিফ ইকবাল/এসইউ/জেআইএম