আগাম বোরো ধান
জয়পুরহাটে ফলন ভালো হলেও দাম নিয়ে শঙ্কা
উত্তরের জেলা জয়পুরহাটে শুরু হয়েছে আগাম ইরি-বোরো মৌসুমের ধান কাটা। অতিরিক্ত গরমে কৃষকদের কষ্ট হলেও কাটা, মাড়াই আর পরিবহনে ব্যস্ত কৃষকেরা। বসে নেই নারীরাও। মনের আনন্দে ধান শুকিয়ে ঘরে তোলার কাজে সহযোগিতা করছেন। ঝড়-বৃষ্টি না হওয়ায় ভালো ফলনের আশা তাদের। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শ্রমিক এসেছে ধান কাটতে। এখন ভালো দাম পেলেই তারা খুশি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাটে চলতি ২০২২-২০২৩ মৌসুমে ৬৯ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে ৬৯ হাজার ৬০০ হেক্টর। গত বছর বোরো চাষাবাদ হয়েছিল ৬৯ হাজার ২৭৭ হেক্টর জমিতে।
এছাড়া জেলায় এবার বিভিন্ন উচ্চফলনশীল (উফশী) জাতের ধান ৬২ হাজার ৮৭৫ হেক্টর এবং হাইব্রিড জাতের ধান ৬ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮১ হাজার ৬৮৬ মেট্রিক টন।
আরও পড়ুন: বৈশাখে কৃষকের করণীয়
সদরের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, মাঠজুড়ে সোনালি ধানের সমারোহ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় দ্রুত কাটা হচ্ছে আগাম জাতের ধান। আগাম জাতের শুভলতা ও খাটো জিরাশাইল নামক জাতের বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে পুরো মাড়াই মৌসুম শুরু হবে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে।
সদর উপজেলার জামালগঞ্জ পাকার মাথা এলাকার কৃষক বেলাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবার ১০ বিঘা জমিতে আগাম বোরো ধানের আবাদ করেছি। জমিতে ফলন ভালো হয়েছে। ধানের দাম ভালো পেলে লাভবান হওয়া যাবে।’
সদর উপজেলার ধারকী পাকারমাথার মোশাররফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি এবার ৯ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছি। বোরো ধানের বাম্পার ফলন দেখে কষ্টের কথা ভুলে গেছি। ঝড়, বৃষ্টি না হলে ভালো পরিমাণ ধান ঘরে তুলতে পারবো।’
আরও পড়ুন: ব্লাস্ট রোগে নষ্ট আগাম জাতের ব্রি-ধান ২৮
একই গ্রামের ফরিদ মন্ডল বলেন, ‘এবার ৩ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। এতে খুশি আমি। জ্বালানিসহ কৃষি উপকরণের দাম বেশি থাকায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তাই বাজারে ধানের ভালো দাম না পেলে ক্ষতির মুখে পড়ার শঙ্কাও আছে।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোছা. রাহেলা পারভিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হওয়ায় বোরো ধানের এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। স্বপ্নের বোরো ধান সঠিক সময়ে ঘরে তুলতে জেলায় কাটা-মাড়াইয়ের জন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান দেওয়া হয়েছে। এবার ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে।’
এসইউ/এমএস