বৈশাখ মাসে পাট চাষে করণীয়
বৈশাখ মাস তোষা পাটের বীজ বোনার উপযুক্ত সময়। দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটিতে তোষা পাট ভালো হয়। এই সময়ে সঠিক পরিচর্যা করলে পাট চাষে সফল হতে পারেন চাষিরা। আসুন জেনে নেই পাট চাষে চাষিদের করণীয় সম্পর্কে-
বীজ বপন
প্রতি কেজি বীজে ৪ গ্রাম ভিটাভেক্স বা ১৫০ গ্রাম রসুন পিষে বীজের সঙ্গে মিশিয়ে শুকিয়ে নিয়ে সারিতে বা ছিটিয়ে বুনতে হবে। সারিতে বুনলে প্রতি শতাংশে ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। ছিটিয়ে বুনলে আরেকটু বেশি অর্থাৎ ৩৫ থেকে ৪০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়।
সার প্রয়োগ
ভালো ফলনের জন্য শতাংশ প্রতি ৮০০ গ্রাম ইউরিয়া, ২০০ গ্রাম টিএসপি, ২৫০ গ্রাম এমওপি সার শেষ চাষের সময় মাটিতে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। জমিতে সালফার ও জিংকের অভাব থাকলে জমিতে সার দেওয়ার সময় শতাংশ প্রতি ৪০০ গ্রাম জিপসাম ও ৫০ কেজি দস্তা সার দিতে হবে। শতাংশ প্রতি ২০ কেজি গোবর সার ব্যবহার করলে রাসায়নিক সারের পরিমাণ অনেক কম লাগে।
আরও পড়ুন: ভিসকোস তৈরির উজ্জ্বল সম্ভাবনা ও করণীয়
পরিচর্যা
আগে বোনা পাটের জমিতে আগাছা পরিষ্কার, ঘন চারা তুলে পাতলা করা, সেচ এসব কাজ যথাযথভাবে করতে হবে। সেচ দিয়ে মাটির উপযোগী কীটনাশক দিয়ে ঘোড়াপোকা দমন করতে হবে।
পোকা দমন
এ সময় পাটের জমিতে বিছাপোকা এবং ঘোড়াপোকার আক্রমণ হতে পারে। বিছাপোকা দলবদ্ধভাবে পাতা ও ডগা খায়, ঘোড়াপোকা কচিপাতা ও ডগা খেয়ে পাটের ক্ষতি করে। আক্রমণ রোধ করতে ডিমের গাদা এবং পাতার নিচ থেকে পোকা সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। বিছাপোকা আক্রান্ত গাছগুলো তুলে ফেলে দিতে হবে এবং জমি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
রোগ-বালাই
পোকা ছাড়াও পাটের জমিতে কাণ্ডপচা, কালপট্টি, নরম পচা, শিকড় গিট, হলদে সবুজ পাতা এসব রোগ দেখা দিতে পারে। নিড়ানি, আক্রান্ত গাছ বাছাই, বালাইনাশকের যৌক্তিক ব্যবহার করলে এসব রোগ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায়। আক্রমণ বেশি হলে অনুমোদিত কীটনাশক সঠিকভাবে, সঠিক সময়ে, সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।
আরও পড়ুন: চৈত্র মাসে পাট চাষে করণীয়
সেচ ও কৌশল
মাটিতে রস না থাকলে বা দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হলে হালকা সেচ দিতে হবে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে থাকলে তা নিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। জমিতে ডালপালা পুতে দিলে পোকা খাদক পাখি এসব পোকা খেয়ে দারুণ উপকার করে।
এসইউ/এমএস