ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

বীজ মেলার পর্দা নামছে আজ, ২০ ব্যবসায়ী পাবেন সম্মাননা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ১০:২৫ এএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ভালো বীজে, ভালো ফসল। এটিই কৃষির মূলমন্ত্র। কৃষিতে বিপ্লব ঘটাতে প্রযুক্তিতে যেমন নজর দিতে হবে তার থেকেও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে বীজে। সঠিক বীজের মান ও উন্নত বীজের গুরুত্ব দেশের কৃষক ও কৃষিকাজে সংশ্লিষ্টদের বোঝাতে দেশে প্রথমবারের মতো বসেছে বাংলাদেশ সিড কংগ্রেস।

বাংলাদেশ সিড অ্যাসোসিয়েশন এবং সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ১১-১৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই সিড কংগ্রেস।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সিড কংগ্রেসের দ্বিতীয় দিনে উপস্থিত ছিলেন অসংখ্য দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানী, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ডিলার, বীজ ব্যবসায়ী, বীজ শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কৃষিবিদ, ব্যাংকার, শিক্ষক ও কৃষক প্রতিনিধি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিদেশি প্রতিনিধি।

এর আগে শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সিড মেলার শুভ উদ্বোধন করেন।

বীজ মেলার পর্দা নামছে আজ, ২০ ব্যবসায়ী পাবেন সম্মাননা

এছাড়াও সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। সমাপনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বীজশিল্প বিকাশে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০ জন বীজ ব্যবসায়ীকে মরণোত্তর সম্মাননা দেওয়া হবে।

সিড কংগ্রেসে ১৩টি প্যাভিলিয়ন ও ৬০টি স্টল রয়েছে যার মধ্যে ১০টি বিদেশি স্টল। তাছাড়াও কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে সকল প্রতিষ্ঠান স্টলসহ মেলায় অংশ নেয়। এসব স্টলে প্রদর্শিত হয়েছে বিভিন্ন কৃষি প্রযুক্তি, বেশি ফলনশীল জাতের বীজ, নতুন উদ্ভাবিত জাতের বীজ ও ফসল, বিভিন্ন আবহাওয়ার সঙ্গে অভিযোজিত জাতের বীজ এবং গোলপাতা, তালপাতাসহ বিলুপ্তি প্রায় বিভিন্ন গাছের ছোট ছোট চারা।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন বোর্ডের (বিএডিসি) স্টল থেকে উপ-পরিচালক ড. রিপন কুমার শিকদার জাগো নিউজকে বলেন, সিড কংগ্রেস ২০২৩ এ বিএডিসি অংশ নিয়েছে এবং অনেক আগে থেকেই বীজ মেলাগুলোতে বিএডিসি জাঁকজমকভাবে অংশ নিয়ে থাকে। বিএডিসি মূলত সার, সেচ এবং বীজ নিয়ে কাজ করে থাকে। আমরা প্রদর্শনীতে বিভিন্ন জাতের বীজ এবং চারা দেখানোর চেষ্টা করেছি।

বীজ মেলার পর্দা নামছে আজ, ২০ ব্যবসায়ী পাবেন সম্মাননা

আলুর ১০টি জাতের চারা ও বীজ রয়েছে যেগুলোর ড্রাই মেটারের (শুষ্ক ওজন) পরিমাণ অন্তত বেশি ফলে এই আলুগুলোর সংরক্ষণের ক্ষেত্রে স্থায়িত্ব অনেক বেশি। আমাদের ল্যাবে যেভাবে বীজ পরীক্ষা করা হয় তার একটি মডেল, বিভিন্ন আবহাওয়ায় চাষ উপযোগী বিভিন্ন জাত, শাক সবজির বীজ, সৌর চালিত সেচ পদ্ধতির মডেল, মাইক্রো গ্রিন পদ্ধতিতে বিশুদ্ধ পুষ্টির উৎপাদনের মডেল উপস্থাপন করেছি।

এছাড়াও প্রযুক্তিগত দিকে সিড ক্লিনার কাম গ্রেডার রয়েছে যেটি সিড প্রসেসিং করে একইসাথে সিড ব্যাগিং করে ফেলে, সিড ড্রায়ার রয়েছে যেটি সিডের পানির পরিমাণ কমাতে ব্যবহৃত হয়, সৌর শক্তিতে চলমান ডাগওয়েল এবং ছাদ বাগানের একটি মডিউল রয়েছে। আশা করি এই মেলাতে আমাদের মাধ্যমে যেসব কৃষক ভাই অথবা শহরবাসী এখানে আসবে তারা কৃষির প্রযুক্তি এবং বীজ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবে।

এগ্রিকোল প্রোডাক্ট ম্যানেজার শরিফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমরা বিভিন্ন জাতের আলু নিয়ে কাজ করছি এবং সেগুলোই প্রদর্শনীতে দেখয়েছি তার মধ্যে কিছু জাত আছে এখনো সেভাবে বাজারজাত করা হয়নি। হয়ত ২-৩ বছরের মধ্যে চলে আসবে। বিভিন্ন জাতের মধ্যে এলুইটি জাতের আলু রয়েছে যেটি ৭৫ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায় এবং আলু আঠালো ধরনের।

বীজ মেলার পর্দা নামছে আজ, ২০ ব্যবসায়ী পাবেন সম্মাননা

কোরাজেন জাতের আলুটি খুব দ্রুত ফলন দেয় এবং ফলন বেশি। এই জাতের সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে এই আলুগুলো আলুর সাধারণ রোগ আর্লি ব্লাইট এবং লেট ব্লাইট প্রতিরোধী। প্যারাদিসো আলুর বৈশিষ্ট্য এটি এক্সপোর্ট কোয়ালিটি। দেখতে সুন্দর এবং খেতেও সুস্বাদু। বাংলাদেশের যারা রপ্তানিকারক আছে তারা এই জাতের আলু এক্সপোর্ট করতে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।

এডাটো আলুর জাতটি সম্পূর্ণ ব্লাইট রোগ প্রতিরোধী এবং কোনো প্রকার ব্যবস্থা ছাড়াই ৬ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায় এবং চিনি বা স্টার্চের পরিমাণ একই পরিমাণ থাকবে। লেভান্টো নামে আরেকটি জাত রয়েছে যেটি ব্লাইট প্রতিরোধী হওয়ায় কোনো প্রকার কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই আলু উৎপাদন সম্ভব এর ফলে কৃষকের বিঘাপ্রতি ১৫-২০ হাজার অর্থ বাঁচবে এবং ভোক্তার শরীরেও কোনো প্রকার ক্ষতি হবে না।

বীজ মেলার পর্দা নামছে আজ, ২০ ব্যবসায়ী পাবেন সম্মাননা

এছাড়াও ফুলকপির হোয়াইট ফ্লাশ ২০২০ জাত রয়েছে যেটির ফুলের অংশ অনেক শক্তিশালী এবং সাদা ফলে এর সংরক্ষণ কালও বেশি। ২-৩ দিন কোনো প্রকার ফ্রিজিং ছাড়াই ভালো থাকে।

সিড কংগ্রেসে আশা কৃষি বিষয়ক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও গবেষকদের মতে, বীজের মান উন্নতিতে ভূমিকা রাখবে সিড কংগ্রেস। মাঝে মধ্যেই বীজের মান খারাপ হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন কৃষকরা। বীজের মান যতো ভালো এবং রোগ বালাই মুক্ত হবে ততই বাড়বে ফলন। প্রতি বছরই এমন উদ্যোগ নিলে এবং কৃষক সমাজ সচেতন হলেই সম্ভাবনা বাড়বে এক নতুন দিগন্তের।

তাসনিম আহমেদ তানিম/এমআরএম/জেআইএম