কৃষ্ণচূড়ায় রঙিন বরগুনার শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ
রোদের দাপটে পুড়ছে প্রকৃতি। প্রচণ্ড দাবদাহের মধ্যে প্রকৃতিকে রাঙাতে কৃষ্ণচূড়া ফুটেছে শাখায় শাখায়। রক্তরাঙা কৃষ্ণচূড়া আর হলুদ কনকচূড়া ফুলে রঙিন এখন বরগুনার শহীদ মিনার প্রঙ্গণ। দেখে মনে হচ্ছে প্রকৃতি যেন তার মনের ভাষায় শহীদদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছে ফুলে ফুলে।
বাতাসের দোলায় দুলতে দুলতে গাছ থেকে অনবরত ঝরে পড়ছে ফুলগুলো। সবুজ ঘাসে মোড়ানো মাঠটিও যেন লাল-হলুদ সাজে সেজেছে নতুন করে। গাছের নিচে দাঁড়ালে মনে হবে কোনো রক্তিম বর্ণের ঝলমলে আলোর উৎসব চলছে। মাথার উপর লাল সবুজের সামিয়ানা। পায়ের নিচে যেন ঝরা ফুলের বিছানা।
এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য কর্মব্যস্ত মনুষের হৃদয়ে দোলা দিয়ে যায়। কেউ সৌন্দর্য উপভোগে, আবার কেউ গরমের তীব্রতায় নিজেকে শীতল করতে আশ্রয় নেন কৃষ্ণচূড়ার ছায়াতলে। ক্ষণিকের বিশ্রাম মনে এনে দেয় এক ভিন্ন প্রশান্তি।
স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম কিবরিয়া পিন্টু বলেন, কবি আল মাহমুদের কবিতা ‘একুশের কবিতা’ মনে পড়ে যায় শহীদ মিনারে রক্তিম এ কৃষ্ণচূড়া দেখে। শহীদ মিনার প্রঙ্গণজুড়ে যেন সেই ভাষা শহীদদের রক্তের প্রতিফলন এখন সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে।
মাঠের একাংশে কৃষ্ণচূড়া থাকলেও ফাঁকা পড়ে আছে এখনো অনেক জায়গা। তাই ব্যক্তি উদ্যোগের সঙ্গে সরকারি উদ্যোগে সীমানা প্রাচীর ঘিরে আরও কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণ করা উচিত।
২০১০ সালে ব্যক্তি উদ্যোগে একুশের চেতনায় ২১টি কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগিয়েছিলেন হোসেন হাফিজ নামের স্থানীয় একজন সংবাদকর্মী। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে লাগানো বাগানটির নাম দেন ‘কৃষ্ণকানন’। তবে বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিকূলতা অতিক্রম করে কৃষ্ণকাননে মাত্র ১৩টি গাছ টিকে আছে।
কৃষ্ণকাননের উদ্যোক্তা সোহেল হাফিজ জাগো নিউজকে বলেন, আমরা সবসময় দেখি শহীদ মিনারগুলো মলিন হয়ে থাকে সারাবছর। তাই শহীদ মিনারের চারপাশকে সুন্দর করে রাখার চিন্তা থেকেই কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো লাগানো হয়েছে।
শহীদ মিনারের চারপাশে যদি ফুলে ফুলে ভরা থাকে তাহলে শহীদ মিনারটাকে আলাদাভাবে মানুষ উপলব্ধি করতে পারবে। তখন শহীদদের জন্য নির্মিত শহীদ মিনারের পরিপূর্ণতা পায়।
এমএমএফ/এমএস