লালশাক চাষ করে বছরে দেড় লাখ টাকা আয়
বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই কমবেশি লালশাক চাষ হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে লালশাক চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এমনই একজন হলেন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকার মোহাম্মদ আসলাম। তিনি ৫ বিঘা জমিতে লালশাক চাষ করে বছরে প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করেন।
আসলাম জানান, দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে তিনি বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন। এবার মরণঘাতী করোনার প্রভাবে বীজের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় সবজি চাষ করে তিনি ক্ষতিগ্রস্থও হয়েছেন। তবে লালশাকের ফলন ১২ মাস হওয়ায় চলমান পরিস্থিতিতেও তিনি আলোর মুখ দেখছেন।
বীজ বপনের ২০-২৫ দিন পর লালশাক বিক্রির উপযোগী হলে পাইকারি মূল্যে তিনি তা বিক্রি করে দেন। আর লালশাকের ফলন ভালো হওয়ায় আসলাম প্রতি মাসেই লাভের মুখ দেখছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৫ বিঘা জমিতে আসলাম শুধুমাত্র লালশাকের বীজ বপন করেছেন। সেখানে নিজে কাজ করার পাশাপাশি এক মাস অন্তর অন্তর শাক উঠিয়ে খুচরা বিক্রেতাদের নিকট পৌঁছে দেয়ার জন্য তিনজন শ্রমিক নিয়োজিত রেখেছেন।
আসলাম জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিবছর ৫ বিঘা জমিতে লালশাক চাষ করতে আমি ৫০ হাজার টাকা খরচ করি। এসব খরচ বাদ দিয়ে লালশাক বিক্রি করে আমার দেড় লাখ টাকা লাভ থাকে।
এদিকে খরচ কম হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা লালশাক চাষে উৎসাহ পায় বলেও জানান মোহাম্মদ আসলাম। লালশাক চাষ করে সফলতার মুখ দেখলেও সবজি চাষের ব্যাপারে আসলাম বিড়ম্বনার কথাও জাগো নিউজকে জানিয়েছেন। সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি নিচু এলাকা হওয়ায় সবজি চাষ করতে কৃষকদের বেগ পেতে হয়।
তিনি বলেন, বর্ষাকাল থাকলে অধিকাংশ জমিতে পানি উঠে যায়। যতোটুকু সম্ভব আমরা বাঁধ দিয়ে সবজি চাষ করার চেষ্টা করি। তারপরও আমি সন্তুষ্ট। কারণ অনেক এলাকায় বর্ষাকালে সবজি চাষ করার সুযোগও থাকে না।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. তাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, লালশাক অনেক পুষ্টিকর। এতে ভিটামিন এ, বি, সি ও ক্যালসিয়াম রয়েছে। লালশাকসহ অন্যান্য সবজি চাষে কৃষকদের উৎসাহ দিতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।
এদিকে খরচ কম হওয়ায় কর্মসংস্থানের জন্য তরুণদেরকেও বাণিজ্যিকভাবে লালশাক চাষের পরামর্শও দেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, লালশাক চাষে খরচ কম। আত্নকর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তরুণরা লালশাক চাষকেও বেছে নিতে পারেন।
এস কে শাওন/এমএমএফ/জেআইএম